স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীকে (১৯) ধর্ষণের চেষ্টা করেছে প্রান্ত মজুমদার (২৮) নামের স্কুলশিক্ষক চাচা। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন শিক্ষার্থীর কৃষক বাবা। ঘটনার পর আসামি ঢাকায় পলাতক থেকে শিক্ষার্থীর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ অক্টোবর দুপুরে (দুর্গাপূজা উদযাপনের সময়কালে) লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জ বাজারের পাশে শিক্ষক চাচার ভাড়া বাসায়। এ ঘটনায় ওই রাতে শিক্ষক প্রান্ত মজুমদারকে আসামি করে শিক্ষার্থীর বাবা রায়পুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন।
অভিযুক্ত প্রান্ত মজুমদার চারআবাবিল ইউপির ঝাউডুগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়রের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি বলরাম মজুমদারের ছেলে। ভুক্তভোগী মেয়েটি ঢাকায় একটি কলেজের স্নাতক বর্ষের ছাত্রী ও গ্রামের কৃষকের মেয়ে।
শুক্রবার সকালে (৩ নভেম্বর) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কৃষক বাবা মোবাইলে হুমকির বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
মেয়েটির বাবা জানান, গত ২২ অক্টোবর ঢাকা থেকে তার মেয়ে পূজার ছুটিতে বাড়িতে আসে। ২৩ অক্টোবর দুপুরে পূজামণ্ডপ ঘোরানোর কথা বলে মোটরসাইকেলে করে স্কুলশিক্ষক প্রান্ত মজুমদার তার হায়দরগঞ্জ বাজারে ভাড়া বাসায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় চিৎকার দিলে মেয়েটিকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা চালায় প্রান্ত মজুমদার। পাশের লোকজন আহত মেয়েটিকে উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এ ঘটনায় ছেলের বিচার চেয়ে বলরাম মজুমদারকে জানালে সে উল্টো লাঠি ও রড নিয়ে মেয়েটি ও তার মা-বাবাকে মারধর করে। এ সময় নিরুপায় হয়ে মেয়েটি ৯৯৯ নাম্বারে কল দিলে রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের সহযোগিতায় ওই পরিবারকে উদ্ধার করা হয়। পরে প্রান্ত মজুমদারকে আসামি করে থানায় মামলা করেন মেয়েটির বাবা।
আসামি প্রান্ত মজুমদার ঢাকায় পলাতক থেকে ও তার বাবা বলরাম মজুমদার বাদী পক্ষকে নিয়মিত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলাও করে ওই শিক্ষকের বাবা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামি প্রান্ত মজুমদার ও তার পিতা বলরাম মজুমদার বলেন, ‘প্রতিপক্ষের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ চলছে। এ কারণে তাদের মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করে পরিবারের সবাইকে হয়রানি করছে। আমরাও আদালতে মেয়েটিসহ পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’
এ বিষয়ে চরআবাবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরে আলম জিকু বলেন, ‘স্কুলশিক্ষক চাচার কলেজপড়ুয়া ভাতিজিকে ধর্ষণচেষ্টা ও গলা টিপে হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মেয়ের পক্ষ রায়পুর থানায় ও ছেলের পক্ষ লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে মামলা করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ। মেয়েটির বাবাকে হুমকির বিষয়টি শুনেছি।’
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুখ মজুমদার জানান, কলেজছাত্রী ধর্ষণচেষ্টা মামলার তদন্ত চলছে। আর হুমকির বিষয়টির সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।