কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীতে দীর্ঘ দিন পর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ খেলাকে ঘিরে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে ধরলার দুই তীর। নৌকা খেলাকে ঘিরে বসেছে হরেক রকমের স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান। দুর-দুরান্ত থেকে শিশু কিশোরসহ নানান বয়সের মানুষজনের উপচে পড়া ভিড়ে ধরলার দুই তীর হয়ে উঠেছিলো জনসমুদ্র।
শুক্রবার বিকেলে ধরলা ব্রিজ পাড় এলাকায় নদীতে এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় একটি মহিষ ও দ্বিতীয় পুরস্কার একটি গরু ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি ফ্রিজ উপহার দেন আয়োজকরা।
ঐতিহ্যবাহী এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন উপজেলার ছোট বড় মিলে ২২ টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারির ঝাড় এলাকার ৭১ এর সৈনিক এবং ২য় স্থান অধিকার করেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের শুলকুর বাজার এলাকার উড়ালচন্ডী নামের নৌকাটি।
আরো পড়ুন : এক রাতেই শত বিঘা জমি ধরলায় বিলীন
১১ দিন ধরে চলা এ প্রতিযোগিতায় জেলা ও জেলার বাইরে থেকে আসা বিভিন্ন নৌকা অংশ নেয়। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের সাত ভাই এন্টারপ্রাইজ ও ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ, উড়াল চন্ডী, ফুলবাড়ি উপজেলার বাংলা বাজার এন্টারপ্রাইজ, দশ বন্ধু, মামা ভাগ্নে, হলোখানা ইউনিয়নের দশের দোয়া ও একতা,গাজী সৈনিক, রৌমারী ও জামালপুর,ও গাইবান্দার তুফান তরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৭১ এর সৈনিক ছিলো উল্লেখযোগ্য।
প্রতিযোগিতার ফাইনালে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট আইনজীবী আব্রাহাম লিংকন, কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাজু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, পাভেল, ফিরোজ শাহীসহ অনেকে।
নৌকাবাইচ দেখতে আসা মো. জাহিদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছর পর ধরলা নদীতে নৌকা খেলা দেখতে পেলাম। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে এ খেলা দেখার মজাই আলাদা। আমি চাই প্রতি বছর এই নৌকা খেলা চালু হোক। গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্য আবার ফিরে আসুক।
চর কদমতলা গ্রামের মোহসিনা বলেন, আমি আমার পরিবারের সবাই মিলে নৌকা ভাড়া নিয়ে এ খেলা দেখতে এসেছি। খুব মজার একটা সময় কাটলো।
আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. ভজু মিয়া বলেন, গ্রাম বাংলার অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয় লোকজন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এ খেলাটিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টানা ১১ দিন ধরে খেলার সার্বিক সহযোগিতা করেছি। সুষ্ঠুভাবে নৌকাবাইচ শেষ করে বিজয়ীদের হাতে পুরুষ্কার তুলে দিতে পেরেছি। আশা রাখি আগামী বছরে আরো ব্যাপক আয়োজনে নৌকাবাইচ খেলা উপহার দিতে পারবো।