ধর্ষ*ণের শিকার নারীর টু ফিঙ্গার নিষিদ্ধের রায় প্রকাশ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকেল পরীক্ষায় ‘টু ফিঙ্গার’ পদ্ধতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। 

বুধবার রায় প্রকাশের বিষয়টি জানিয়েছে রিটকারী সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।

২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল এ বিষয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত আটটি নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্লাস্ট। 

রায়ে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার নারীর ক্ষেত্রে দুই আঙুলের পরীক্ষা অবৈজ্ঞানিক। তাই এই পরীক্ষা নিষিদ্ধ। চিকিৎসকেরা ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার সনদে ধর্ষণের বিষয়ে মতামত দেবেন। কিন্তু কোনোভাবেই অমর্যাদাকর শব্দ, যেমন—অভ্যাসগতভাবে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত প্রয়োগ করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীকে তাঁর অতীতের যৌন সম্পর্কে কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন না। 

এতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার নারীর যৌনাঙ্গে কোনো গভীর ক্ষত পরীক্ষার জন্য গাইনি বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হবে।

শিশু বা কিশোরীর ক্ষেত্রে পার স্পেকিউলাম (একধরনের যন্ত্র) পরীক্ষা করা যাবে না, যদি না কোনো বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন থাকে।

ধর্ষণের শিকার নারীর পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও সেবিকাদের নিয়োগ করতে হবে। এ পরীক্ষার সময় নারী পুলিশ, একজন নারী আত্মীয়ের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। একজন নারী চিকিৎসকের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে হবে। কর্তব্যরত চিকিৎসক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এ পরীক্ষার ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করবেন।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, আদালত নিশ্চিত করবেন যে, ধর্ষণের শিকার নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে এমন কোনো প্রশ্ন আইনজীবী করবেন না।

রায়ে আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, সাংবিধানিক বিধান, আন্তর্জাতিক চুক্তি, জাতিসংঘ প্রণীত নির্দেশিকা, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ফরেনসিক বিজ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে; ‘দুই আঙুলের পরীক্ষা’ বন্ধে এবং ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের গোপনীয়তার অধিকার, তাঁদের ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার, শারীরিক অখণ্ডতা, তাঁদের ব্যক্তিসত্তা ও অন্তর্নিহিত মর্যাদার প্রতি সম্মান নিশ্চিতে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। 

পর্যবেক্ষণে আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি নাবালিকা হয়, সেক্ষেত্রে তার আইনি অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া কোনোভাবেই কোনো ডাক্তারি পরীক্ষা করা যাবে না। ভুক্তভোগী ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে লক্ষ রাখতে হবে, পুনরায় শারীরিক ও মানসিকভাবে কোনোরূপ নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণের শিকার হয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তি যেন বিচারবিমুখ না হয়ে যায় ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা - dainik shiksha শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058231353759766