কক্সবাজারের চকরিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষায় নকল করতে অনৈতিক সুবিধা না দেয়ায় বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঘটেছে এ ঘটনা। পরীক্ষার্থীদের মারমুখী আচরণ ও নানাবিধ হুমকির মুখে প্রায় তিনঘন্টা অবরুদ্ধ ছিলেন বিভিন্ন কলেজের ১৮ জন শিক্ষক। পরে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান এর নির্দেশে বিকাল আনুমানিক তিনটার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. রাহাত উজ জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের জিন্মিদশা থেকে উদ্ধার করেছেন।
অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার হয়েছেন পরীক্ষাকেন্দ্রে পর্যবেক্ষকের দায়িত্বরত শিক্ষক চকরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, সাইফুল ইসলাম, মামুনুল হক, জামিলাতুন নেছা, মনজুরুল হক, ছাবেকুন্নাহার লিমু, ইকবাল মোরশেদসহ মোট ১৮ জন। তাদের মধ্যে ৯ জন শিক্ষক ছিলেন চকরিয়া সরকারি কলেজের। অন্যরা ছিলেন চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ ও চকরিয়া সিটি কলেজের শিক্ষক।
অবরুদ্ধ শিক্ষকরা বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল এইচএসসি ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা। এদিন সকাল ১০টায় উপজেলার ডুলাহাজারা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে যথারীতি পরীক্ষা শুরু করা হয়। অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেন ডুলাহাজারা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পর্যবেক্ষকের দায়িত্বরত শিক্ষকদের দাবি, পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন কক্ষে একাধিক পরীক্ষার্থী নকল করার জন্য চেষ্টা করেন। ওইসময় তাদেরকে সর্তক করা হয়। একপর্যায়ে তারা (পরীক্ষার্থীরা) জোটবদ্ধ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে অনৈতিক সুবিধা নিতে আমাদের উপর (দায়িত্বরত শিক্ষকদের) নানাভাবে চাপাচাপি করতে থাকে। তাতে কোন শিক্ষক সেই সুযোগ দেয়নি।
শিক্ষকরা বলেন, পরীক্ষা শেষে দুপুর একটার দিকে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা পুনরায় জোটবদ্ধ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। আমরা কেন্দ্র থেকে বের হতে চেষ্টা করলে পরীক্ষার্থীরা অশালীন বাক্য ছুঁড়ে মারমুখী আচরণ করে। তাতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
এই অবস্থায় ঘটনাটি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী (কর্মকর্তা) ইউএনও জেপি দেওয়ানকে অবহিত করে আমরা জিন্মিদশা থেকে উদ্ধারে সহযোগিতা চাই।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, ডুলাহাজারা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় অনৈতিক সুবিধা না দেয়ায় দায়িত্বরত শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো.রাহাত উজ জামানকে পাঠানো হয়।
তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের সহযোগিতায় অবরুদ্ধ শিক্ষকদের উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে আনেন।
চকরিয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিত বড়ুয়া বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষকরা নাজেহাল ও অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আইনী প্রতিকার চেয়ে আমরা চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।