দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরীক্ষায় নকলসহ এক ছাত্র ধরা পড়লেও তার বিরুদ্ধে বিভাগ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সাজবুল ইসলাম নামের ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের কাছের অনুসারী বলে ক্যম্পাসে পরিচিত। কিন্তু সেই ছাত্রলীগ নেতা সাজবুলের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ আবদুল ওদুদ।
সোমবার (৩ জুন) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ‘সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইন ইসলাম’ কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন তার বিরুদ্ধে নকল করার অভিযোগ উঠে। এসময় হাতেনাতে নকল ধরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার হল পরিদর্শক সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন।
অভিযোগ আছে, ৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। এসময় ‘সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইন ইসলাম’ কের্সের পরীক্ষায় হল পরিদর্শক ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন। পরীক্ষায় খাতার নিচে নকল কপি রেখে লিখছিলেন। দায়িত্বরত শিক্ষক ছালেহ উদ্দীন তা দেখা মাত্র খাতা নিয়ে নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, যদি কোন বিভাগে পরীক্ষার হলে নকলের ঘটনা ঘটলে, তাহলে প্রথমে নকলের প্রমাণনসহ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে সবকিছু যাচাই করার পর তা শৃঙ্খলা উপকমিটির কাছে পাঠানো হয়। শৃঙ্খলা উপকমিটিতে সবকিছু পর্যালোচনার পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর জন্য শাস্তি সুপারিশ করে শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সবশেষে শৃঙ্খলা কমিটিতে শান্তি দানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। তবে ছাত্রলীগ নেতা সাজবুল নকলসহ হাতেনাতে ধরা পড়ার পরও বিভাগ থেকে তার নামে কোনো অভিযোগ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠানো হয়নি।
শৃঙ্খলা উপকমিটির আহ্বায়ক হলেন আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ এবং অন্য সদস্যরা হলেন- কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা , প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পরীক্ষা নিযন্ত্রক জহুরুল ইসলাম।
এ বিষয়ে ওই সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল ওদুদকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফোনে এ বিষয়ে কোন ধরণের কথা বলতে বলতে চাইনা। তিনি অফিস টাইমে তার সামনে গিয়ে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) জহুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি অসুস্থতার কথা বলে ফোনে মন্তব্য করতে রাজি হোননি। তবে আরেকটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, যদি কোন শিক্ষার্থীর নকলের বিষয়ে বিভাগ থেকে আমাদের কাছে অভিযোগ লিখিত আকারে না পাঠানো হয়, তাহলে এতে আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে আমাদের কোন দোষ নেই, বিভাগের দোষ।
অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা সাজবুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে ফাও খাওয়ার পর খাবারের বিল চাওয়ায় ক্যান্টিনের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের আশেপাশের বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদাবাজি, বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলা সহ ক্যাম্পাসের সামনে চলাচলকারী বিভিন্ন বাস ও ট্রাকের ড্রাইভারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজিরও অভিযোগও রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এসব অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।