কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নবম শ্রেণির ভোকেশনাল পরীক্ষায় নকলের সুযোগ করিয়ে দিতে ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে ১ হাজার ৯০০ টাকা করে চেয়েছেন এক শিক্ষক। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আইসিটি শিক্ষক মো. মুসা হাওলাদার এমনটি করেছেন বলে জানা গেছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের কাছে এ টাকা চাওয়ার ভিডিও ফাঁস হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসার অধ্যক্ষকে এ নির্দেশ দেন নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন , আগামী ১ নভেম্বর আমাদের পরীক্ষা শুরু হবে। আর এই পরীক্ষায় নকল করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটসহ কেন্দ্র যারা দায়িত্বে থাকবে তাদের ম্যানেজ করতে প্রতি শিক্ষার্থীকে ১ টাকা ৯০০ টাকা করে আগামী ২৬ অক্টোবরের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন মুসা স্যার (মুসা হাওলাদার)। একদিন যেতে না যেতেই আমাদের টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন ওই শিক্ষক। টাকা না নিয়ে গেলে আমাদেরকে বেত দিয়ে মারধর করেন। পরে সেটি কেউ গোপনে মোবাইলে ধারণ করে। পরে তা স্থানীয় একজনের ফেসবুকে আইডির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়. শিক্ষক বলছেন, ‘ফাজিল কথা কও! কথা কইলে বোঝোনা! বইয়ের ২-১টা টোটকা,টোটকা ফটো ছিড়িয়া পকেটে লওয়া যায়। বই কি সব পকেটে লইতে পারবি? এক্সফেল কইরা দেবে। শুধু এক্সপেল্ট না সাথে সাথে যে পরীক্ষক তারে বাইর কইরা দেবে। মোবাইল তো দূরের কথা। মোবাইল তো পিডাইয়া আজীবনের জন্য এক্সফেল কইরা দেবে।
আঞ্চলিক ভাষায় ওই শিক্ষক আরো বলেন,‘-----টাকা! টাকা! টাকা, হোন না টাহার কথা! টাকা না গেলে টাইট দিয়া দেবে, ডাইরেক্ট। এই যে মোরা তোগো কাছে টাহা চাই, টাহা কইলো হেয়ানে দিয়া আই! হেরা আনসার,বিডিআর, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ন্ত্রণ করে, বুজো না ক্যান? সব গাড অইবে। ম্যাজিস্ট্রেটের যতো কমাইয়া দেবে এক্সফেল করিয়া দেবে। ম্যাজিস্ট্রেট তোমার নকল পাইলেই এক্সফেল। নকল পাইলেই এক্সফেল্ট।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. মুসা হাওলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মাদরাসার অধ্যক্ষ বাহাউদ্দীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা দাবির অভিযোগ ওঠায় তাকে শোকজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মাদরাসা অধ্যক্ষকে বলা হয়েছে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে। এছাড়া তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের পরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।