সারাদেশে বেড়েই চলছে ডেঙ্গু প্রকোপ। প্রায় প্রতিদিনই পাওয়া যাচ্ছে মৃত্যুর সংবাদ। একদিকে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক, অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে ক্যাম্পাস খোলার দুই সপ্তাহ পেরোলেও ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার উৎপত্তিস্থল, অপরিচ্ছন্ন ড্রেন, ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখা কিংবা মশা নিধনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই প্রশাসনের।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিকেলের পরপরই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান আবাসিক হল ও দোকানপাটে মশার উপদ্রব দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জ্বরে অসুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা নিধনে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, যথাযথ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানের ড্রেনগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যেখানে এডিস মশা জন্মানোর উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হলের চারপাশের ড্রেন, শিক্ষকদের ডরমিটরির সামনের ড্রেন, সেতুবন্ধ গেস্ট হাউজ ও নতুন রাস্তা সংলগ্ন ড্রেন, প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন স্থান, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব অংশ, গাহি সাম্যের গান মুক্ত মঞ্চের পূর্ব অংশ, ব্যথার দান মেডিকেল সেন্টারের চারপাশসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়তই আবর্জনা ও পানি জমে থাকে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র।
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন সাকিব বলেন, হল এবং ডরমিটরির আশেপাশের পরিবেশ অপরিষ্কার থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েরই ডেঙ্গু আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রশাসনের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। নাহলে খুব দ্রুতই ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করবে।
বঙ্গমাতা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হলে প্রচুর মশা। কয়েকদিন আগে স্প্রে করলেও মশা কমেনি। দরজা-জানালা বন্ধ রাখলেও মশা থেকে বাঁচার উপায় নাই।
ব্যথার দান মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল খায়ের মো. হেলাল উদ্দিন জানান, ক্যাম্পাস খোলার ২য় সপ্তাহেই বিশের অধিক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে পরীক্ষা করিয়েছেন।
বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট নুসরাত শারমিন তানিয়া বলেন, ক্যাম্পাস খোলার দিনই ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকতে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের জানিয়েছি। ইতোমধ্যে পৌরসভার সাথে যোগাযোগ করে গত তিনদিন আগে হলে স্প্রে করা হয়েছে। তবে হলের পাশের ড্রেনে পানি জমে আছে। উপাচার্য স্যারের মাধ্যমে প্রকৌশল দপ্তরকে জানিয়েছি।