নতুন নিয়োগবিধি বাস্তবায়নের আগে শিক্ষকদের ১০-১১ গ্রেড নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা আপাতত দশম গ্রেড পাচ্ছেন না। তাদেরকে ১১তম গ্রেডই দেয়া হচ্ছে। আর সহকারী শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১৩তম গ্রেড। সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ উচ্চ পর্যায়ের পদগুলো আপগ্রেড হলে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দেয়া হবে। বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চেয়েছেন বলেও সভাপতি এ সময় উল্লেখ করেন। জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক সচিব এর সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, আপতত প্রধান শিক্ষকদের ১১তম আর সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড দেয়া হবে। আমরা নতুন নিয়োগ বিধির সুপারিশ করেছি। ওই নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন হলে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারদের পদটি ৯ম গ্রেডে উন্নীত হবে। সেটা হলেই আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের স্কেল আপগ্রেড করে ১০ গ্রেড করতে পারবো।   

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নন ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ বিধি ১৯৮৫ সংশোধনের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুন বিধিমালায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নবম গ্রেড দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ পদে সরাসরি নিয়োগ ও পদোন্নতির মাধ্যমে পদায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিধিতে উপজেলা শিক্ষা শিক্ষা অফিসারের পদ ৭ম গ্রেড করা হয়েছে। পদটি পুরোপুরি পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। বিধিতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য পদও আপগ্রেড করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিধিমালায় প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেড করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য আলী আজম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়ছে এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিবেচনাধীন আছে। শিগগিরই এর একটা সুরাহা হবে।

এদিকে বৈঠকে মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোপূর্বে গঠিত সংসদীয় সাব কমিটির সর্বশেষ কার্যক্রম কমিটিতে তুলে ধরা হয়েছে। জানা গেছে, বৈঠকে সাব কমিটির একাধিক সদস্য মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষাবঞ্চিত ১৫+ বয়সীদের ৬ মাস ব্যাপী শিক্ষাদানের মাধ্যমে নিজের স্বাক্ষর প্রদানসহ সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন (পত্রিকা পড়া)করে তোলার কথা থাকলেও সেটা আদৌ হচ্ছে না। কাঙ্খিত ফল লাঘ না হলেও চলমান প্রকল্পের অর্ধেক অর্থ ইতোমধ্যে ছাড় হয়েছে। বাকি অর্থ ছাড়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সাব কমিটি এসব প্রকল্প এলাকার শিক্ষা কেন্দ্রগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেবে তার আগে অর্থ ছাড় না দেয়ার বিষয়ে বৈঠকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব কমিটির সদস্য আজী আজম বলেন, আমরা সাব কমিটি এ বিষয়ে কাজ করছি। সবগুলোতে সম্ভব না হলেও আমরা দ্বৈবচয়নের মত করে কতগুলো কেন্দ্রে যাবো। তারপর সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদন দেবো। আমাদের প্রতিবেদন না দেয়ার আগে তাদের টাকা ছাড় না দিতে বলা হয়েছে।

বৈঠকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশের ৬৪ জেলায় চলমান মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের কার্যক্রমের সাথে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে তদারকির মাধ্যমে মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।

প্রসঙ্গত: কমিটির পূর্ববর্তী বৈঠকে (১৮ সেপ্টেম্বর) মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের কর্মকান্ড নিয়ে কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুকে আহবায়ক করে ৫ সদস্যের একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। ওই সাব কমিটিকে দেশের চলমান মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের কার্যক্রম ও নিকটস্থ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী রিডিং পড়তে পারে কী না সেই বিষয়ে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২০ শতাংশ নতুন পদ সৃষ্টির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।

বৈঠকে জানানো হয় ১৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলমান। নব্য জাতীয়করণকৃত স্কুলে এ সকল শিক্ষককে পদায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, মেহের আফরোজ, নজরুল ইসলাম বাবু, ইসমাত আরা সাদেক, শিরীন আখতার,আলী আজম এবং ফেরদৌসী ইসলাম  অংশগ্রহণ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052869319915771