ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। প্রায় দুই মাস ধরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পর ফ্রান্সে অবশেষে সরকার গড়ার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিশেল বার্নিয়েকে সরকার গড়ার দায়িত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ। উল্লেখ্য, ফ্রান্সে আগাম সংসদ নির্বাচনে কোনো দল বা শিবির প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারায় বর্তমানে রাজনৈতিক অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
আপাতত ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের বাজেট পাশ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক ব্রেক্সিট মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অভিজ্ঞ এই রক্ষণশীল রাজনীতিক বিভিন্ন দলের সমর্থন নিয়ে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারবেন বলে ম্যাখোঁ আশা করছেন। ২০১৬ থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একাধিক আলোচনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বার্নিয়ে। ফ্রান্সের রিপাবলিকান পার্টির (এলআর) হয়ে দীর্ঘদিন রাজনীতিও করেছেন। ছিলেন ফ্রান্স ও ইইউয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ পদেও।
বার্নিয়ে ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। তার বয়স ৭৩ বছর, যা ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের নতুন প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর নজিরবিহীন। তিন বছর আগে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত নিজের দলেরই সমর্থন পাননি।
বার্নিয়ের নিয়োগ এমন একটি সময়ে এলো, যখন ফ্রান্স রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
গত জুন ও জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত আগাম জাতীয় নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় পার্লামেন্ট বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এখন এই বিভক্তি মোকাবিলা করে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন বার্নিয়ের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বার্নিয়ের এই নিয়োগকে ঘিরে বামপন্থি রাজনৈতিক জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এনএফপি দাবি করেছে, আগাম নির্বাচনে সবচেয়ে ভালো ফল করার পরও ডানপন্থি একজনকে প্রধানমন্ত্রী করা হচ্ছে, যা তাদের মতে একটি ডানপন্থী সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়েরকে।
এখন এমন একটি সরকারব্যবস্থা গঠন করতে হবে যেখানে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক ভাগে বিভক্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সুরক্ষিত থাকবে। বিভক্তি এড়িয়ে টেকসই একটি সরকার গঠনের চ্যালেঞ্জ হাতে নিতে হবে বার্নিয়েরকে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনিসহ ইউরোপের অনেক নেতা বার্নিয়েকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সাফল্য কামনা করেছেন।