নতুন শিক্ষানীতির পর আইন

রুম্মান তূর্য |

কোচিং-নোট গাইড নিষিদ্ধ করে পরিশুদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থার আশা দেখিয়েও একাদশ জাতীয় সংসদে আলোর মুখ দেখেনি বহুল প্রতীক্ষিত শিক্ষা আইন। একযুগেরও বেশি সময় আগে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে প্রণয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হলেও এ আইনটি প্রণীত হওয়া নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ কোচিং-নোট গাইড নিষিদ্ধ করে তৈরি করা শিক্ষা আইনের খসড়টি এক রকম ‘ছুড়ে ফেলে দেয়া’ হয়েছে। আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কমিটি বলছে, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতি হালনাগাদ বা নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের পর শিক্ষা আইন প্রণয়নের চিন্তাভাবনা করতে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে এ আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হওয়ার পর  খসড়ায় কাঁটা ছেড়াতেই গেছে দীর্ঘ সময়। সরকারের চলতি মেয়াদেও এ আইনটি বিল আকারে সংসদে পাস হয়নি।

 

জানা গেছে, নীতিগত অনুমোদনের জন্য আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপন করা হলে নানা অসঙ্গতি থাকায় তা বারবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রতিবারই খসড়াটি ফেরত পাঠিয়ে ‘অধিকতর পরীক্ষা নিরীক্ষা’ করতে বলা হয়েছে। এ আইনটির মাধ্যমে কোচিং ও নোট-গাইড ব্যবসায় লাগাম টানার পরিকল্পনা ছিলো শিক্ষা প্রশাসনের। 

মন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানায়, শিক্ষা আইনের খসড়া পরিমার্জন করে ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত প্রদান সংক্রান্ত কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য পাঠানো হয়েছিলো। কমিটির পঞ্চম সভায় ওই খসড়া উপস্থাপন করা হয়। তবে কমিটির সুপারিশের আলোকে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি হালনাগাদ বা নতুন শিক্ষানীতি করার পর সে অনুযায়ী শিক্ষা আইন প্রণয়নের পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেষ্টা করেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের নিরীক্ষা ও আইন অনুবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

তবে এ অনুবিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি হালনাগাদ করার সময় এসেছে বলে সরকারে উচ্চপর্যায় মনে করছে। তাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংশ্লিষ্ট কমিটি বলছে, শিক্ষানীতি হালনাগাদ বা নতুন করে প্রণয়নের পর শিক্ষা আইন করার বিষয়টি ভাবতে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার দর্শন নতুন বা হালনাগাদকৃত শিক্ষানীতিতে উঠে আসবে। 

২০১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ নানা উদ্দেশ্যে সমন্বিত শিক্ষা আইন প্রণয়নের কথা বলা হয়েছিল। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের পর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে ২৪টি উপকমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার একটির উদ্দেশ ছিলো শিক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়ন।

যদিও জাতীয় শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়নে সংশ্লিষ্টারা মনে করছেন, খসড়ায় কোচিং-নোট গাইড নিষিদ্ধ করে পরিশুদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা আশা দেখানোতেই আলোর মুখ দেখলো না শিক্ষা আইন। আইনগতভাবে কোচিং-নোট গাইডের নিষিদ্ধ হওয়া ঠেকাতে কাড়ি কাড়ি টাকা উড়িয়েছেন কোচিং-নোট গাইড মালিকরা। ওই টাকাই শিক্ষা আইনের আশার গুড়ে বালি হয়ে নেমে এসেছে। যদিও তাদের এ দাবির প্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ তারা উপস্থাপন করতে পারেননি। 

গত ২ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের পর্দা নামে। এর দুই দিন আগে গত ৩০ অক্টোবর রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে করা এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, সরকারের এ মেয়াদে শিক্ষা আইন আর আলোর মুখ দেখছে না। আগামী মেয়াদে যদি দেখে....। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030908584594727