পাবলিক পরীক্ষায় নকলবাজির ইতিহাসে দেশ সেরাদের সেরা নলছিটি। এই তকমা ছিলো এরশাদ জমানায়। জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম হতো প্রায়শই। জাঁকজমক না থাকলেও আজও নীরবে নিভৃতে নকলবাজি চলছেই।
অভিভাবকদের মতে, এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এখন যারা পরীক্ষার দায়িত্বে তারাই এরশাদ জমানায় নকলবাজি করে এসএসসি, এইচএসসি ও ডিগ্রির বৈতরণী পার হয়েছিলেন। নকল করে পাস করাদের অনেকেই এখন সরকারি-বেসরকারি কলেজের শিক্ষকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন।
এ বছরও এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনেই বই দেখে লেখার সময় জেড এ ভুট্টো ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে তিন পরীক্ষার্থী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ধরা পড়েন। পরে হলের দুই পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। আর বিষয়টি ধামাপাচা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন নকলবাজচক্র ও তাদের পৃষ্ঠপোষকরা।
পরে দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তায় নকলের সে খবর প্রকাশিত হলে সচেতন মহলে হৈ-চৈ পড়ে যায়। তারা বলছেন, এমন চলতে থাকলে নকলের স্বর্গরাজ্যের তকমা পাবে নলছিটি!
সচেতন মহল নলছিটির নকল ঠেকাতে প্রশাসনের আরো কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
একনজরে নলছিটির কেন্দ্র, ভেন্যু ও কর্মকর্তারা (কেন্দ্র সচিব), কলেজ
নলছিটিতে কলেজ শাখায় মোট তিনটি কেন্দ্র রয়েছে। এগুলো হলো-নলছিটি সরকারি কলেজকেন্দ্র, জেড এ ভূট্টো ডিগ্রি কলেজ ও দপদপিয়া ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজ। নলছিটি সরকারি কলেজকেন্দ্রটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই কলেজ অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম কবির।
নলছিটি সরকারি কলেজটির আওতায় সরকারি নলছিটি ডিগ্রি কলেজ ও মাওলানা গোলাম মোস্তফা খান মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ ভেন্যুতে পরীক্ষা দিচ্ছেন।
জেড এ ভূট্টো ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ওই কলেজেরই অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী তালুকদার। এ কেন্দ্রটির আওতায় ৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসছেন। কলেজগুলো হলো-আব্দুল মালেক কলেজ, রানাপাশা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বৈশাখিয়া টি এইচ এম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নলছিটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এবং আব্দুস সালাম কলেজ। কেন্দ্রটির ভেন্যু জেড এ ভুট্টো মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।
অধ্যক্ষ দপদপিয়া ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কলেজটির এসএম তাহেরুজ্জামান। কেন্দ্রটির আওতায় ২টি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। কলেজ দুটি হলো-দপদপিয়া ইউনিয়ন কলেজ ও ফিরোজা আমু স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আর কেন্দ্রটির ভেন্যু ভরতকাঠি জি আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
বিএম শাখা: জেড এ ভূট্টো ডিগ্রি কলেজটি এইচএসসির বিএম শাখার কেন্দ্র। এ কেন্দ্রটিরও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেড এ ভুট্টো ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী তালুকদার। কেন্দ্রটির আওতায় ৪টি কলেজ রয়েছে। এগুলো হলো-জেড এ ভূট্টো ডিগ্রি কলেজ, দপদপিয়া ইউনিয়ন কলেজ, এ্যাড হারুনুর রশীদ খান ফাউন্ডেশন মহিলা কলেজ ও জয়কলস টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ।
টিএন্ডটি শাখা: টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টিএন্ডটি শাখার পরীক্ষায় নলছিটি ডিগ্রি কলেজটি ভেন্যু। নলছিটি প্যালেস্টাইন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাফিজুর রহমান কেন্দ্রটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
আলিম শাখা: আলিম শাখায় নলছিটিতে ২টি কেন্দ্র। নলছিটি ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসা ও হদুয়া বৈশাখিয়া কামিল মাদরাসা। নলছিটি ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসা কেন্দ্রটির আওতায় ৪টি মাদরাসা রয়েছে অংশ নিয়েছে। নলছিটি ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন কেন্দ্রটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। যেসব মাদ্রাসার থেকে কেন্দ্রটিতে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সেগুলো হলো-নলছিটি ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসা, ফয়রা নেছারিয়া ফাজিল মাদরাসা, তিমিরকাঠি ফাযিল মাদরাসা ও হাড়িখালী ফাযিল মাদরাসা।
অপরদিকে হদুয়া বৈশাখিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রের আওতায় ৫টি মাদরাসা পরীক্ষায় নিয়েছে। হদুয়া বৈশাখিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ কেন্দ্রটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। হদুয়া বৈশাখিয়া কামিল মাদরাসা, সুবিদপুর আলিম মাদরাসা, ভেরনবাড়িয়া আলিম মাদরাসা, কামদেবপুর আলিম মাদরাসা ও তালতলা মহিলা আলিম মাদরাসার পরীক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।
নলছিটিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কলেজ শাখায় ১২৯৬, বিএম ৫৬১ ও মাদরাসায় ২২৪ নিয়ে উপজেলায় মোট ২০৮১ জন অংশ নিয়েছে।
এ বিষয়ে জেড এ ভুট্টো ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী তালুকদার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমার কলেজের কোনো পরীক্ষার্থী নকল করেন না। এখানে অন্য স্কুল-কলেজের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেন, তারা কিছু নকল করেন।
নতুন হওয়া কলেজের পরীক্ষার্থীরাই নকলের চেষ্টা করেন, তারা পড়তে চান না।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।