ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে আসন সংকট, নষ্ট ফটোকপি মেশিন, ছুটির দিনে লাইব্রেরি বন্ধ থাকা, অনলাইন সিস্টেম কার্যকর না করাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এতে পড়াশোনা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও নিজস্ব বই-খাতা ও চাকরির বই নিয়ে গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
এদিকে শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারের এ সব সমস্যা নিয়ে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় এবং হলের রিডিং রুমে পর্যাপ্ত আসন না থাকায় শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করতে আসেন। কিন্তু কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাস শিডিউলের সঙ্গে মিল রেখে লাইব্রেরি সকাল ৯টায় খোলা হয় এবং রাত ৮টার পরে বন্ধ করা হয়। ফলে হলে এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা সকালে ও রাতে পড়াশোনা করতে পারেন না। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে লাইব্রেরিতে আসন রয়েছে মাত্র ৬০০টি। এছাড়াও লাইব্রেরিতে নিজস্ব বই ও চাকরির বই নিয়ে ঢুকতে দেয়া হয় না। নিজস্ব বই নিয়ে পড়ার জন্য একটি রুম থাকলেও তাতে মাত্র ১৫ থেকে ২০টি আসন রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সুযোগ বেশি পায়। কিন্তু ছুটির দিনগুলোতেই গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পড়াশোনায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি লাইব্রেরিতে নতুন বিভাগগুলোর পর্যাপ্ত সংখ্যক বইয়েরও ঘাটতি রয়েছে। তাই বই নিয়েও ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। লাইব্রেরিতে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে বই, সিট ও ডকুমেন্ট ফটোকপির মেশিনটিও নষ্ট হয়ে আছে। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের বাইরের দোকান থেকে বেশি মূল্যে ফটোকপি করতে হচ্ছে। এছাড়াও লাইব্রেরির বই খুঁজার জন্য অনলাইন সিস্টেম থাকলেও তা অকেজো হয়ে আছে। বই খুঁজে পেতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, লাইব্রেরিতে আমাদের নিজস্ব বই নিয়ে ঢুকতে দেয়া হয় না। বই নিয়ে পড়ার জন্য রুম থাকলেও তাতে আসন একেবারেই সীমিত। ফলে আমরা লাইব্রেরিতে যাওয়ার আগ্রহ পাই না। এছাড়াও ছুটির দিনে লাইব্রেরি বন্ধ থাকে। ফলে আমাদের পড়াশোনায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এ বিষয়ে গ্রন্থাগারিক শাহনাজ বেগম বলেন, আমরা লাইব্রেরির সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। অনলাইন সিস্টেম এবং ফটোকপি মেশিন সচল করার জন্য কাজ চলছে। আগামী ২৮ অক্টোবর উপাচার্যের সঙ্গে লাইব্রেরির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বসার কথা রয়েছে। সেখানে আমরা লাইব্রেরির সার্বিক বিষয়ে তুলে ধরবো।