নালিয়ার দোলায় হচ্ছে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চূড়ান্ত স্থান নির্বাচন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। জেলা শহর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দক্ষিণে কুড়িগ্রাম-চিলমারী মহাসড়কের পাশে নালিয়ার দোলায় এই স্থান স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া এবং কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে দক্ষিণ দিকে কুড়িগ্রাম-চিলমারী মহাসড়কের পাশে বেলগাছা ও মোঘলবাসা ইউনিয়নে এই নালিয়ার দোলা অবস্থিত। দোলাটি এক ফসলি জমি এবং এতে সরকারের ৮৫ দশমিক ৩৪ একর খাসজমি রয়েছে। এর কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী রেলপথ ও সড়কপথ রয়েছে। নালিয়ার দোলা থেকে পূর্ব দিকে মোঘলবাসা ইউনিয়নসংলগ্ন জেলা শহর থেকে নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার জন্য নৌঘাট রয়েছে। এখানে ১৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে সুবেদার মীর জুমলা তাঁর বাহিনী ও নৌবহর নিয়ে কোচবিহার আক্রমণের জন্য দুই দিন অবস্থান করেছিলেন। নালিয়ার দোলার পশ্চিম দিকে জেলার একমাত্র শিল্পাঞ্চল বিসিক শিল্প নগরী অবস্থিত। এ কারণে স্থানটি নৌ যোগাযোগ ও গবেষণার জন্য উপযুক্ত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণের জন্য আমরা দুবার কুড়িগ্রাম গিয়েছি। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিকভাবে নালিয়ার দোলাকে প্রথম পছন্দ হিসেবে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। নালিয়ার দোলায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও রিসার্স পারসন সবার সুবিধা হবে। নালিয়ার দোলা স্থানটির সঙ্গে সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথের সংযোগ রয়েছে। নদীর খুব কাছে হলেও স্থানটি নদীভাঙনমুক্ত। আমাদের অভিজ্ঞতা ও সার্বিক দিক বিবেচনায় নালিয়ার দোলাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হিসেবে নির্বাচন করেছি।’

প্রথম পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২৬০ একর জমির প্রয়োজন। সেখানে ৮৫ দশমিক ৩৪ একর সরকারি খাসজমি রয়েছে। খাসজমির বাইরে ওই স্থানে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আমাকে দিয়েছেন। ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নালিয়ার দোলায় কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান চূড়ান্ত হয়েছে। খুব দ্রুতই আমরা ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করব।’

কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের স্থান নির্বাচনের সুপারিশের চিঠি পেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে জানিয়েছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জায়গা চাই। জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখবে।’

উপাচার্য বলেন, ‘আগামী শিক্ষাবর্ষে দুটি অনুষদে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে চাই। প্রতিটি অনুষদে ৩০ জন করে মোট ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ইউজিসি বরাবর পরিকল্পনা জমা দিয়েছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা শহরের অব্যবহৃত কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিল অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছি। সেটি না পাওয়া গেলে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন অথবা ভাড়া বাসা নিয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাস করা হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ - dainik shiksha ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো - dainik shiksha দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা - dainik shiksha ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056641101837158