কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছেন নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কাজী এজাজ কায়সার। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর তিনি লিখিতভাবে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
অপরদিকে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার প্রতিবাদে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও পূর্বনির্ধারিত তারিখেই ভোট গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টায় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান। এসময় উপস্থিত ছিলেন উক্ত নির্বাচনের প্রার্থী সাজাহান আলী, মিলন শেখ, আরিফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, নাইমুর রহমান সাগর, মোছা. সাম্মি আক্তার ও পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মান্নান মোল্লা প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, নিয়ম ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু একপ্রকার অনভিজ্ঞ, অদক্ষ, অরাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ছত্রছায়ায় চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচন স্থগিত করেছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সেজন্য স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পূর্বনির্ধারিত তারিখেই ভোট গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুর রহমান নামে একজন প্রার্থী বলেন, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি ঘটেনি। ভোটারদের মাঝে উৎসব বিরাজ করছে। তিনি নির্ধারিত সময়েই ভোট গ্রহণের জন্য দাবি জানান।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ নির্বাচন -২০২৩ এর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ নির্বাচনে বিদ্যালয়ের ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৬০৮ জন। তার বিপরীতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন ১১ জন প্রার্থী। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা করে নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিত করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিম মিলন বলেন, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোট হওয়ার কথা ছিল। ইতিমধ্যে ১১ জন অভিভাবক সদস্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। কিন্তু (মঙ্গলবার) দুপুরে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে স্থগিত ঘোষণা করে স্থগিতপত্র তার হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয় এলাকায় এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
জানতে চাইলে নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কাজী এজাজ কায়সার বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানাবিদ অভিযোগের কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছেন। পরবর্তী কার্যক্রম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিচালনা করবেন বলে জানান তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কর্তৃপক্ষ পুলিশের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেনি বলে জানান তিনি।