নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে ভোট চুরির সুযোগ নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে উন্নয়ন হয় তা প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ।
সদ্য সমাপ্ত কাতার সফর নিয়ে সোমবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে; এটা তো আমাদেরই স্লোগান। আমাদের যে আন্দোলন তা আগাগোড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। জনগণের ভাতের অধিকার ও ভোটের অধিকারের আন্দোলনও আমাদের করা। সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমি ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে আমার সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কৃষি গবেষণা উৎসাহিত করা, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দেশব্যাপী মজবুত ও নিরাপদ ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, জৈব প্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা, বৃত্তি, অনুদান প্রচলনসহ নানাবিধ উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে। কাতার সফরকালে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলো করুণা বা দাক্ষিণ্য চায় না। বরং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য পাওনা চায়। জাতিসংঘের এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই সম্ভবত বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব, আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হব।
তিনি আরও বলেন, এই সম্মেলনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমি বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে আমি ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে বিভিন্ন দাবি ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে কোভিড অতিমারি ও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য নেওয়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিশেষ প্রয়োজনের কথা তুলে ধরি।
গত ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী কাতার সফর শেষে দেশে ফেরেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ মার্চ কাতার সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি, প্রবাসী শ্রমিকদের ইস্যুসহ দুই দেশের দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে আলাপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি, কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেইখা মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।