আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার বিষয়টি এখন পর্যন্ত নয়টি দেশ নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, চীন এবং রাশিয়ার পর্যবেক্ষক রয়েছে। এছাড়া বর্তমান বাংলাদেশে অবস্থানরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক্সপার্ট টিম এবং ওআইসি, কমনওয়েলথ ও আরব পার্লামেন্ট নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত নয়টি দেশ পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশগুলো হলো- ভারত, চীন, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, জাপান, উজবেকিস্তান, মরিশাস, জর্জিয়া এবং ফিলিস্তিন। সেহেলী সাবরীন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটা এক্সপার্ট মিশন বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তারা ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে। নির্বাচন কমিশন বর্তমানে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে অ্যাক্রিডিটেশনের (অনুমতি) জন্য প্রাপ্ত আবেদন পর্যালোচনা করছে। তাদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশে আসবেন তা কমিশন কর্তৃক চূড়ান্ত হলে জানা যাবে।
লিবিয়া থেকে ফিরেছেন আরো ১৪০ বাংলাদেশি
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের দারনা শহরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১১৩ জন ও বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ২৭ জন বাংলাদেশিসহ সর্বমোট ১৪০ জন অভিবাসীকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন জানান, লিবিয়ার বুরাক এয়ারের একটি ফ্লাইটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারা অবতরণ করেছেন। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের সহযোগিতার জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়।
এ লক্ষে দূতাবাসের টিম একাধিকবার দারনা শহর সফর করেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন। এছাড়া দূতাবাসের পক্ষ থেকে দারনা ও আল-বাইদা শহরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদেরকে জরুরি ওষুধ, ত্রাণসামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। তবে দারনা শহরে বন্যা কবলিত প্রবাসীদের পাসপোর্টসহ বৈধ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাদের দেশে প্রত্যাবাসনে কিছুটা বিলম্ব হয়। প্রত্যাবাসনকৃত অসহায় এসব বাংলাদেশি নাগরিককে বিমানবন্দরে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) কর্মকর্তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় আইওএম এর পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনকৃত প্রত্যেককে পকেট মানি হিসেবে ৫ হাজার ৯১৯ টাকা এবং কিছু খাদ্যসামগ্রী উপহার দেয়া হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (কল্যাণ) মোস্তফা জামিল খান বিমানবন্দরে ফিরে আসা অভিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে আটক অভিবাসীদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর লিবিয়ায় তাদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা প্রতিবেশী ও আত্মীয় পরিজনদের সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। অবৈধ উপায়ে টাকা খরচ করে কিংবা দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশের উদ্দেশ্যে আর কেউ যাতে যাত্রা না করে সে বিষয়ে পরিচিতদের সচেতন করতে অভিবাসীদের অনুরোধ জানান পরিচালক (কল্যাণ)।
উল্লেখ্য, লিবিয়ায় বিপদগ্রস্তসহ বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইওএম এক সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত ত্রিপলি ও বেনগাজীর ডিটেনশন সেন্টারে আটকসহ বিপদগ্রস্ত মোট ৯৭৫ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। খুব শীঘ্রই অনিয়মিত সব বাংলাদেশি নাগরিককে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হবে।