আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদ্যালয়গুলোর পুরনো ভবন না ভাঙার জন্য সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ভবন ভাঙার পরিবর্তে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, মাঠ কর্মকর্তারা বিষয়টি উত্থাপন করলে আলোচনার পর ভবন না ভেঙে তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ইসি সচিব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কারপূর্বক ভোটগ্রহণ উপযোগী করা, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন স্থাপনের কাজ শুরু না করা, চলমান অর্থবছরের বিদ্যালয়ভিত্তিক (ভোটকেন্দ্রে) ক্ষুদ্র মেরামতের অর্থ দ্রুত ছাড়করণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর নির্দেশনা দেন। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব মো. ফরহাদ আহাম্মদ খানকে তিনি বিষয়টি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটের খুব বেশি সময় নেই। যেহেতু অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র হিসেবে বিদ্যালয়ের ভবনগুলো ব্যবহার হয়, তাই এ সময়ের মধ্যে পুরনো ভবন ভাঙা হলে ভোটগ্রহণ ব্যাহত হবে। পুরনো ভবন না ভেঙে সেগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে সংস্থাটি।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, আমাদের প্রকাশিত খসড়া তালিকার ওপর যে দাবি-আপত্তি এসেছিল, সেগুলোর শুনানি শেষে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ১০৩টি। এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু ভবন রয়েছে পুরনো। সেগুলো না ভেঙে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বলা হচ্ছে।
গত ১৬ আগস্ট ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। সেই তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি জানাতে সময় দেওয়া হয়েছিল ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে তা নিষ্পত্তির শেষ সময় ছিল গত ১৭ সেপ্টেম্বর।
খসড়া তালিকা অনুযায়ী, ৪২ হাজার ৩৫০টির মতো ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করেছিল জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কমিটি। সেখানে ভোটকক্ষ রাখা হয়েছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০টির মতো। এর মধ্যে শুনানি শেষে টিকেছে ৪২ হাজার ১০৩টি। এতে ভোটকক্ষ রয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজারের মতো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৮৩টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়। এতে ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি।
সর্বশেষ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন।