ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ১৬ মাস পর ট্রাইব্যুনালে ভোট পুনর্গণনা বিজয়ী হয়েছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ১ নম্বর রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী মো. মোজাম্মেল হোসেন। রোববার সকালে আদালত তার মামলার রায়ের নথি দিয়েছে। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ নির্বাচন ট্রাইবুনাল সদর আদালতের বিচারক সুলতান উদ্দিন প্রধান এই মামলায় পুনরায় ভোট গণনা শেষে বাদি মোজাম্মেল হোসেনের পক্ষে রায়ের ফল দেন।
ভোট গণনায় মোজাম্মেল হোসেন ফুটবল প্রতীকে ২০৭ ভোটে বিজয়ী হন। গণনা শেষে জানা গেছে, ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী মোট ৬৫০ ভোট পান এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ নজরুল ইসলাম মন্ডল ফ্যান প্রতীকে ৪৪৩ ভোট পান। মামলার রায়ের কপি ও তথ্য দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ।ভোট পুনর্গণনায় নতুন করে বিজয়ী প্রার্থী মুজাম্মেল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নির্বাচনে ভোট গণনার সময় নজরুল ইসলাম মন্ডল তার লোকদের দিয়ে আমি ও আমার সমর্থক মো. শাজাহান শেখ, হাবিজুর, মঞ্জুয়ারা খাতুনসহ ২৫ জনকে মারধর করে আহত করে। কেন্দ্রে প্রধান প্রিজাইডিং অফিসার মো. রেজাউল করিমকে তিন লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে ফ্যান মার্কার জয় নিশ্চিত করেন নজরুল। অথচ সঠিকভাবে ভোট গণনা হলে তখনই আমি বিজয়ী হতাম।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ নভেম্বর উল্লাপাড়া উপজেলার ১ নম্বর রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া ভোট গণনায় ইউপি সদস্য পদে ফুটবল প্রতীকে মোজাম্মেল হেসেন ৫৬৫ ভোট ও তার বিপরীতে ফ্যান প্রতীকে নজরুল ইসলাম মন্ডল ৫৯২ ভোট পেয়েছিলেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রিজাইডিং অফিসার। পরে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জানুয়ারি নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ফুটবল প্রতীকের মোজাম্মেল হোসেন বাদি হয়ে পুনরায় ভোট গণনার জন্য মামলা করেন। পরে দীর্ঘ ১৬ মাস পর দুই প্রার্থীর উপস্থিতে সিরাজগঞ্জ নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল সদর কোর্টের বিচারক সুলতান উদ্দিন প্রধান পুনরায় ভোট গণনা করেন। এতে ফুটবল প্রতীকের মোজাম্মেল হোসেন মোট ৬৫০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। পড়ে আদালতের রায়ের কপি চেয়ে আবেদন করলে রোববার সকালে আদালত থেকে রায়ের কপি প্রকাশ পায়।
বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘ ১৬ মাস আইনি লড়াই শেষে আদালত দুই প্রার্থী, প্রিজাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার ও দুইপক্ষের আইনজীবীর সামনে ভোট গণনা করে দেখেন মোজাম্মেল হোসেন ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এতে করে মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। পরবর্তীতে এই রায়ের কপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়।
জানতে চাইলে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার রেজাউল করিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভোট কারচুপির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার সহযোগীদের ভুলে এমনটা হতে পারে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।