নিলাম ছাড়াই নিয়ে গেলো স্কুলের বেঞ্চ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি |

নিলাম হয়েছে স্থানীয় একটি স্কুলের পুরনো ভবন। অথচ সংশ্লিষ্ট নিলাম ডাককারী ব্যক্তির লোকজন পুরাতন ভবনের সঙ্গে কারচুপি করে নিয়ে গেছে ভবনের ভেতরে থাকা পাঠদানে ব্যবহৃত লোহার বেঞ্চ। এদিকে নিলাম ছাড়াই স্কুলের বেঞ্চ নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে অবগত নন উপজেলা নিলাম কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকৌশলী। সম্প্রতি এমন দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর ডাউকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ স্কুলের একটি পুরনো ভবন নিলামের জন্য ওই ভবনের নানা উপকরণ উল্লেখপূর্বক মে মাসে প্রায় এক লাখ টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরি করেন উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকোশলী (এলজিইডি) অসিত বরণ দেব। এতে উল্লেখ ছিল না বেঞ্চের কথা। ভবনটির প্রাক্কলন মূল্য প্রায় এক লাখ টাকা হলেও এটি প্রকাশ্য নিলাম ডাকে মাত্র ৮ হাজার ৬০০ টাকায় পেয়ে যান হারুন অর রশিদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। নিলামকৃত পরিত্যক্ত ভবনটির মালামাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও একজন উপসহকারী প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জুলাই মাসে কার্যাদেশ প্রদান করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম। কার্যাদেশ পেয়ে সংশ্লিষ্ট নিলাম ডাককারীর লোকজন উল্লিখিত ব্যক্তিদের অনুপস্থিতিতেই নিলামকৃত ভবনটি ভেঙে-এর মালামাল নিয়ে যান। এ সময় তারা স্কুল কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে নিলাম ছাড়াই কারচুপির মাধ্যমে স্কুলের পাঠদানে ব্যবহৃত লোহার এঙ্গেলের তৈরি লক্ষাধিক টাকার বেঞ্চও নিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক মিয়া জানান, নিলামে বেঞ্চের কথা উল্লেখ না থাকলেও ডাককারীর লোকজন বেঞ্চগুলো নিয়ে গেছেন।  

বেঞ্চ নেওয়ার সময় বাধা দিলেন না কেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম স্কুল খোলার দিন নিলামের মালামাল নিতে; কিন্তু তারা বন্ধের দিন আমার অনুপস্থিতিতে বেঞ্চগুলো নিয়ে গেছে।’

নিলাম ডাককারীর পক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজহারুল হক ফরিদ জানান, ‘মূল নিলাম ডাককারী হারুন অর রশিদের কাছ থেকে নিলামকৃত ভবনটি কিনে তা অপসারণ করেছেন তিনি। নিলামের মালামাল অপসারণের সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক মিয়া ও এসএমসি সভাপতির স্বামী মামুন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বেঞ্চ নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা কোনো বাধা দেননি।’

নিলাম ডাককারী হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, এ স্কুলের নিলাম ডাক পেয়ে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য আজহারুল হক ফরিদ ও স্কুল কমিটির সভাপতির স্বামী মামুনের কাছে তা বিক্রি করে দেন। কারচুপির মাধ্যমে যদি তারা বেঞ্চ নিয়ে থাকেন, তা হলে অন্যায় করেছেন। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

স্কুলের এসএমসি সভাপতি আঞ্জুয়ারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, নিলামের মালামাল সরানোর সময় পুরনো কয়েকটি বেঞ্চ নেওয়া হয়েছে। তবে এগুলো নিলাম ডাকের মধ্যেই ছিল বলে তিনি দাবি করেন।

উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব জানান, উল্লিখিত স্কুলের পুরনো ভবন নিলামের প্রাক্কলনে ফার্নিচারের কথা উল্লেখ করা হয়নি। নিলামকৃত ভবন সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ সংবলিত চিঠি তিনি পাননি। তাই নিলাম ছাড়াই স্কুলের বেঞ্চ নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন।

উপজেলা শিক্ষা প্রাথমিক অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘নিলাম ছাড়াই স্কুলের বেঞ্চ নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে অবগত করেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0021789073944092