মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় থাকাদের সঠিক সংখ্যা না জানালেও এটি খুব বড় নয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। শুক্রবার রাতে গুলশানে নিজ বাসায় মার্কিন ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু নিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি। আপনারা এটা মার্কিন দূতাবাস বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে হয়তো জানতে পারবেন। এটার বিষয়ে দুই দিন আগেই হেডস আপ দেওয়া হয়েছিল। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথেও তারা কথা বলেছে। আমাদের সংখ্যা সম্বন্ধে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে। তারা যদি না বলেন… মার্কিন দূতাবাস হয়তো বলতে পারবে। তবে সংখ্যাটি বড় নয়, ছোট এটা বলতে পারি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, আমরা আশা করব সেটা সঠিক তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই নেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকারের কেউ এটার আওতায় পড়লে আমরা এটা জানব। এতে সরকারের কাজে সমস্যা তৈরি হলে পরবর্তীতে মার্কিন প্রশাসনের সাথে আমরা কথা বলব। এর আগেও, অন্তত তিনজনের বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হয়েছে। আমরা সাকসেসফুল হয়েছি। কাজেই এই নীতির ফলে কার্যক্রমে সমস্যা হলে, সেগুলো আমরা জানলে, সেটা নিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা কথা বলব।'
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা বিদেশি কারও ইন্টারফেয়ারেন্স দেখতে চাই না। যখন তারা তাদের ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন, আমরা এটা ভালোভাবেই নিয়েছি। আমরা এখনো দেখছি জনজীবনে সমস্যা করে বিরোধী দল একদফা দাবিতে মাঠে আছেন। এই দাবি অনেক কাল আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমরা এটাকে অবশ্যই নির্বাচনকে বাধা দেওয়া হিসেবেই দেখছি। আমরা তো মনে করি, তাদেরই (বিএনপি) বেশি শঙ্কা থাকার কথা। আমরা বলছি যে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেন নির্বাচন করতে পারে, এ জন্য আমরা সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাব।'
নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক বাংলাদেশির ওপর নতুন ভিসা নীতি আজ শুক্রবার প্রয়োগ শুরু করেছে আমেরিকা। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় যারা পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন সরকার ও বিরোধী দলীয় রাজনীতিক এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার দায়ে তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে আমেরিকা।
অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ভিসা পাবেন না বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়, তাঁদের কেউ আমেরিকা প্রবেশ করতে পারবেন না। এমন আরও কাউকে পাওয়া গেলে তাঁদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের ওপর।
অবশ্য বাংলাদেশের জন্য মার্কিন ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরুতে উদ্বেগের কিছু দেখছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারাবদ্ধ।
এর আগে, এ বছরের ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা করে আমেরিকা। এতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে দেশটির অব্যাহত নজরদারির বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা দায়ী বা জড়িত, তাঁদের ভিসা দেবে না আমেরিকা।