নিয়ম অমান্য করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক নিকাহ রেজিস্ট্রার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি |

হবিগঞ্জের মাধবপুরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে একাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক একইসঙ্গে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা একইসঙ্গে আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। উপজেলায় এমন ৭ জন নিকাহ রেজিস্ট্রারের তথ্য পাওয়া গেছে যারা একইসঙ্গে এমপিওভুক্ত বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক। জেলা রেজিস্ট্রারকে ম্যানেজ করেই তারা একইসঙ্গে দুটি চাকরি করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালা ও এমপিও কাঠামো ২০২০ সালের সংশোধিত বিধিতে বলা আছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা একইসঙ্গে একাধিক পদে চাকরিতে কিংবা কোনো আর্থিক লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে এমপিও বাতিল ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১টি ওয়ার্ডে নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৭ জন শিক্ষক। তাদের মধ্যে ৫ জন এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ২ জন এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক।

বুল্লা ইউনিয়নের বানেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আজিজুর রহমান ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করতে পারেন কি না জানতে চাইলে আজিজুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রারের নলেজে আছে। এটা কোনো সমস্যা না।’

মাধবপুর দরগাবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক সেলিম হোসেন মাধবপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন। বহরা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন তালেবপুর আহসানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জিয়া উদ্দিন। জানতে চাইলে জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘অনেকেই করছে। তাই আমিও করছি।’

বাঘাসুরা ইউনিয়নে নিকাহ রেজিস্ট্রারের কাজ করছেন ড. মহিউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফয়েজ উদ্দিন। তার দাবি, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকের নিকাহ রেজিস্ট্রার হওয়ায় কোনো আইনগত বাধা নেই।’

উপজেলা সদরের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জুনায়েদ আহমেদ লস্কর ছাতিয়াইন ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন। জগদীশপুর ইউনিয়নে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন ইটাখোলা সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক নুরুল ইসলাম। তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

আদাঐর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার অলিউর রহমান মাধবপুর প্রেমদাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

জানা যায়, বিয়ে নিবন্ধনের জন্য সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ‘নিকাহ রেজিস্ট্রার’ নামে অভিহিত করা হয়। প্রতিটি বিয়ের কাবিনের অর্থের ওপর নির্দিষ্ট হারে তারা ফি নিয়ে থাকেন। কয়েকজন নিকাহ রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন বিয়ে নিবন্ধনের মাধ্যমে তারা মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন অজুহাতে সরকার নির্ধারিত ফি-এর চেয়ে বেশি আদায় করে অনেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকাও আয় করেন।

নিকাহ রেজিস্ট্রারদের দাবি, সারা দেশে ১ হাজার ৭০০ এমপিওভুক্ত শিক্ষক একইসঙ্গে নিকাহ রেজিস্ট্রারের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। বিবাহ নিবন্ধনের কাজ কোনো সরকারি চাকরি নয়।

হবিগঞ্জের জেলা রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি দেখার এখতিয়ার আইন মন্ত্রণালয়ের।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028409957885742