নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলামের ঘুষ গ্রহণের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনাসহ অর্থ আত্মসাতের আরও নানা অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে দুই দফায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল-আমিন সরকার।
উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। চলতি বছরে এ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, ল্যাব সহকারী ও নৈশপ্রহরী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার আগেই প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ৩ লাখ টাকা ঘুষ নিচ্ছেন এমন ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিয়োতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি প্রধান শিক্ষককে তার নিজ কক্ষে ঘুষ দিতে গেছেন। প্রথমে ২ লাখ টাকা প্রধান শিক্ষকের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু প্রধান শিক্ষক টাকা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ৩ লাখ নগদ টাকা তার হাতে দিলে তিনি সেটা গ্রহণ করেন।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুকুর ইজারার টাকা, রসিদ ছাড়া টাকা উত্তোলন, ভর্তি ও সেশন ফি এবং চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন সভাপতি আল-আমিন সরকার। তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম নোটিশ দেন তিনি। নোটিশে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাতটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়।
অভিভাবক জহুরুল ইসলাম মাস্টার বলেন, নিজে শিক্ষক হয়েও আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বলতে হচ্ছে। আমাদের স্কুলে লেখাপড়ার মান উঠে গেছে। বর্তমান প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম দুর্নীতিবাজ। তিনি বিদ্যালয়ের পুকুর লিজের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বই বিতরণ করেছেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল-আমিন সরকার বলেন, প্রধান শিক্ষকের নামে আমাদের স্কুলে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। একাধিকবার বলার পরও তিনি কোনো হিসেব দেননি। সম্প্রতি তিনটি নিয়োগের কথা বলে ৩ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের ভিডিয়োটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। এসব কারণে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হলেও তিনি জবাব দেননি। যদি তিনি জবাব না দেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘুষ গ্রহণের ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োর বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম উল্টো সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও তাকে মারধরের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমি থানায় মামলা করেছি। এ জন্য তিনি (সভাপতি) উল্টো আমার নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিচ্ছেন।’ ভিডিয়োর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো টাকা নেইনি। নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো টাকা দেয়নি, আমি নেইনি।’