নিয়োগে অনিয়ম : চবি ভিসির পদত্যাগ চায় শিক্ষক সমিতি

দৈনিক শিক্ষাডটম, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

দৈনিক শিক্ষাডটম,  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও আইন বিভাগের চলমান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্য শিরীণ আখতারের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। একই অভিযোগ তুলে তারা ‍উপ-উপাচার্য বেনী মাধবের পদত্যাগও দাবি করেছেন।

রোববার দুপুরে আইন বিভাগের দুই প্রভাষক পদে নিয়োগের সাক্ষাৎকার হওয়ার কথা ছিলো। তবে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানিয়ে দুপুর থেকে উপাচার্য কার্যালয়ে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। তবে ভিসি গোপনে নিজ কার্যালয় ত্যাগ করে তার বাসভবনে নিয়োগ বোর্ড বসিয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষক সমিতির।

রোববার সন্ধ্যায় চবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী এ সব তথ্য জানিয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতারের পদত্যাগের দাবি জানান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনকে পাশ কাটিয়ে প্রভাষক নিয়োগের পায়তারা করছেন উপাচার্য। এজন্য তারা উপাচার্য ড. শিরিন আখতার ও উপ উপাচার্য অধ্যাপক বেনী মাধবের পদত্যাগ দাবি করছেন। এই দাবিতে সোমবার সকাল ১০ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দুপুর আড়াইটায় আইন অনুষদের প্রভাষক নিয়োগের বোর্ড বসার কথা ছিলো উপাচার্যের কার্যালয়ে। কিন্তু চবি শিক্ষক সমিতির সদস্যরা নিয়মবহির্ভূত এই নিয়োগ বোর্ড বাতিলের জন্য উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে অবস্থান কর্মসূচির মুখে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার গোপনে কার্যালয় ত্যাগ করেন। তিনি কার্যালয় ত্যাগ করলেও তার পছন্দের প্রার্থীকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিতে গোপনে তার বাসভবনে পরীক্ষা বোর্ড বসিয়েছেন। প্রার্থীদের মধ্যে বাছাই করা কয়েকজনকে প্রশাসনের নিজস্ব গাড়িতে করে উপাচার্যের বাসভবনে নেয়া হয়।  অন্যদের প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে শিক্ষক সমিতি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ও শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী, কোন বিভাগে কতজন শিক্ষক দরকার হবে, তা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি। এরপর শূন্য পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর এসব তথ্য পাঠানো হয় নিয়োগ বোর্ডে। বোর্ড প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয় এবং নিয়োগের সুপারিশ করে। পরে সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। তবে বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এসব নিয়ম মানা হচ্ছে না। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি বারবার নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানালেও উপাচার্য তাঁর বিশেষ ক্ষমতার বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন।

একই ক্ষমতার ব্যবহার করে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের জন্যও ডাকা হয়েছে। আইন বিভাগের দুই  প্রভাষক পদের বিপরীতে সাক্ষাৎকার হওয়ার কথা ছিল। এতে ১০ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। আগামীকাল সোমবার বাংলা বিভাগের সাত শিক্ষক পদের বিপরীতে আবেদন করা প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এতে আবেদন করেছেন ৮২ জন। শিক্ষক সমিতি এ দুটি বিভাগেরই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল চেয়েছে।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে উপচার্যের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049998760223389