দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকতার অগ্রদূত ও সাহিত্যিক নূরজাহান বেগমের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ভারত উপমহাদেশের প্রথম নারী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বেগম’ পত্রিকার সূচনালগ্ন থেকে এর সম্পাদনার কাজে জড়িত ছিলেন এবং ছয় দশক ধরে বেগম পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
নূরজাহান বেগম ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জুন চাঁদপুর জেলার চালিতাতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ও মাতার নাম ফাতেমা বেগম। নাসিরউদ্দীন, সওগাত পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে সাড়ে তিন বছর বয়সে মা আর মামা ইয়াকুব আলী শেখের সঙ্গে তিনি কলকাতায় তার পিতার সঙ্গে বসবাস করার জন্য চলে যান।
সাখাওয়াত মেমোরিয়াল বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে ভর্তির মাধ্যমে তিনি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে বেলতলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন কিন্তু সেখান থেকে পুনরায় আগের বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন এবং ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। একই কলেজ থেকে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন।
বেগম পত্রিকার প্রকাশনা শুরু হয় ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ২০ জুলাই যখন নূরজাহান বেগম বিএ শ্রেণিতে পড়তেন। তার বাবা নাসিরুদ্দীন প্রতিষ্ঠিত বেগম পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন সুফিয়া কামাল। বেগমের শুরু থেকে নূরজাহান বেগম ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। তিনি বিয়ে করেন রোকনুজ্জামান খানকে (দাদা ভাই)। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তারা বাংলাদেশে চলে আসেন।
নূরজাহান বেগম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকার শরৎগুপ্ত স্ট্রিটের ৩৮ নম্বর বাড়িতে প্রায় ৬৪ বছর ধরে বসবাস করেছেন। নারী জাগরণ, নতুন লেখক সৃষ্টি, সাহিত্য ও সৃজনশীলতায় নারীকে উৎসাহী করাই ছিলো তার মূল লক্ষ্য। বেগম-এর প্রথম দিকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা লেখা ও ছবি সংগ্রহ করেতেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।