টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত বিক্ষোভের জেরে অবশেষে বহুল আলোচিত-সমালোচিত নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ বিলুপ্ত করেছে ইরান। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
কঠোর বিধি মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনিকে (২২) গ্রেপ্তার করে নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নির্যাতনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষোভ ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ রুখতে দমন-পীড়ন জোরদার করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। এখন দেশটির কর্তৃপক্ষ নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ বিলুপ্তির ঘোষণা দিল।
এদিকে বিক্ষোভে প্রাণহানির সংখ্যা প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে ইরান। শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে জানায়, চলমান পরিস্থিতিতে গত সেপ্টেম্বর থেকে দুইশরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে এটি আন্তর্জাতিক ও দেশটির বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দেওয়া হিসাবের চেয়ে অনেক কম। বিক্ষোভে এরই মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারী মিলিয়ে তিনশর বেশি মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী।
উল্লেখ্য, ইরানি কর্তৃপক্ষ চলমান বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ করছে। তাদের ভাষ্য, বিদেশি শত্রুরা এ বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে। বিক্ষোভে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কমপক্ষে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।