নোবিপ্রবির ১২৩ জন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি |

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ১২৩ জন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষকের হিসাবে যা ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এর মধ্যে চারজনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং অপসারণ করা হয়েছে। আরো চারজনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে এমন তথ্য মিলেছে।

উচ্চ শিক্ষার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পছন্দের দেশ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা ও অস্ট্র্রেলিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ। এসব দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য তাদের ছুটি নিতে হয়।

জানা গেছে, শিক্ষাছুটির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ভাতা পান শিক্ষকেরা। তবে শর্ত থাকে, নির্ধারিত শিক্ষাছুটি শেষে তাদের দেশে ফিরতে হবে। কিন্তু এসব শিক্ষকের অনেকে ভালো সুবিধা পেয়ে বিদেশ গিয়ে আর ফিরছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও অনেকে জবাবও দিচ্ছেন না। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্যানুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৪১৫ জন।  এর মধ্যে ১২৩ জন শিক্ষাছুটি নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন, যা মোট সংখ্যার ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অনেকের শিক্ষা ছুটি শেষ হলেও কর্মস্থলে ফেরেননি। গত ১৫ জুলাইয়ের রিজেন্ট বোর্ডের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দু’জন শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং অন্য দু’জনকে অপসারণ করা হয়েছে।

বর্তমান নোবিপ্রবিতে ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩১টি বিভাগ রয়েছে। অনুষদগুলো হলো- বিজ্ঞান, প্রকৌশল, সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক, ব্যবসায় প্রশাসন, শিক্ষা বিজ্ঞান এবং আইন। দু’টি ইনস্টিটিউটের অধীনে দু’টি বিভাগ রয়েছে। সেগুলো হলো- ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন সায়েন্স এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি।

রেজিস্ট্রার অফিস এবং নোবিপ্রবির ডায়েরির তথ্য অনুযায়ী, প্রকৌশল অনুষদের সিএসটিই’র ৫ জন, এসিসিই’র ১৪, আইসিই’র ৫ এবং ইইই’র ৪ জনসহ মোট ২৮ জন রয়েছেন, যা মোট সংখ্যার ৬.৪৬ শতাংশ। বিজ্ঞান অনুষদের ফিমস’র ৬ জন, ফার্মেসির ৭, এফটিএনএস’র ৮, বিজিই’র ৯, ইএসডিএম’র ১০, মাইক্রোবায়োলজি ১২, এপ্লায়েড ম্যাথ’র ৩, স্ট্যাটিসটিকসের ১, বিএমবি’র ২, ওশানোগ্রাফি’র ৩ এবং এগ্রিকালচারের ৪ জনসহ ৬৫ জন রয়েছে, যা মোট সংখ্যার ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

এছাড়া সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের থেকে ১৮ জন (৪.৩৪ শতাংশ), ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৮ জন (১.৯৯ শতাংশ), শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদের ১ জন (০.২৪ শতাংশ), আইন অনুষদের ১ জন (০.২৪%) এবং দুই ইনস্টিটিউট থেকে ২ জন (০.৪৮ শতাংশ) শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন।

আইন অনুযায়ী, বিদেশে যাওয়া শিক্ষকরা বৈতনিক, অবৈতনিকসহ বিভিন্নভাবে সর্বোচ্চ চার বছর ছুটি নিতে পারেন। এ সময় কারও ডিগ্রি বা গবেষণা শেষ না হলে আরও দু’বছরের অবৈতনিক ছুটি দেওয়া হয়। তবে তার জন্য নিয়ম হলো- চার বছর ছুটি ভোগের পর দেশে ফিরে কাজে যোগদান করতে হবে। এরপর দু’বছরের ছুটির জন্য আবেদন করতে হয়।

চার বা ছয় বছর ছুটি ভোগের পর কেউ যদি পদত্যাগ করতে চান, তাহলে তাকে ছুটির সময় নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে হবে। অথবা সমপরিমাণ সময় চাকরি করার পর নিতে অব্যাহতি হয়। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছুটিতে থাকাকালীন দেশের বাইরে থেকে উপার্জন করেন।

পরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৫৬তম সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং ৭ জুন অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের ৫৮তম সভার আলোচ্যসূচি-১৪ এর সিদ্ধান্তক্রমে দু’জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং দু’জনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

রেজিস্ট্রার অফিসের সংস্থাপন শাখার বিজ্ঞপ্তি হতে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদয় পাওনা সুদসহ টাকা আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে তাদের। নির্দিষ্ট সময়ে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে চাকরি হতে অপসারণের পরিবর্তে বরখাস্ত করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানকে জানানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা আদায়ে নিয়মিত মামলাও হবে।

শিক্ষাছুটির নিয়মের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, শিক্ষাছুটিতে যাওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী শিক্ষককে একটি বন্ডে স্বাক্ষর করে যেতে হয়। বন্ডে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ থাকে। যদি তারা নির্ধারিত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন না করেন, তবে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অর্থদণ্ড দিতে হয়। না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ - dainik shiksha ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির - dainik shiksha ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ - dainik shiksha জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053999423980713