তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নয়াপল্টনে বুধবারের ঘটনার জন্য বিএনপি ও দলটি নেতারাই দায়ী।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আগে থেকেই বলছিলাম যে, বিএনপি সমাবেশ নয়; বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। বিএনপি সমাবেশের ডাক দিয়েছে ১০ ডিসেম্বর। অথচ ৭ ডিসেম্বরই নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করা হয়েছে, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বিআরটিসি বাসে ও আরো গাড়ি-ঘোড়াসহ বিভিন্ন স্থানে তারা আগুন দিয়েছে, আপনারা দেখেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে অবিস্ফোরিত ১৫টি ককটেল, দুই লাখ পানির বোতল, ১৬০ বস্তা চাল, রান্না করা খিচুড়ি, হাড়ি-পাতিল এবং দুই লাখ নগদ টাকা পেয়েছে পুলিশ।
মন্ত্রী বলেন, বুধবার দুপুর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে জমায়েত হতে থাকে। যখন সেখানে একটি রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তখন অন্তত একটি লেন চালু থাকার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ তাদের বারবার অনুরোধ জানায়। তারা সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে। এরপর মতিঝিল-রমনা এলাকার ডেপুটি কমিশনার নিজে গিয়ে আবারও অনুরোধ জানান। যখন তিনি অনুরোধ জানাচ্ছিলেন, তখন তাকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় এবং তার বডিগার্ডকে কোপ দেওয়া হয়। সেখান থেকেই সংঘর্ষের শুরু। এরপর পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ হামলা পরিচালনা করা হয়। হামলায় ৩৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এর মধ্যে আটজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তখন পুলিশ বাধ্য হয়ে টিয়ার গ্যাস ছুঁড়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, একজন সাধারণ নাগরিকের সেখানে মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, তিনি ককটেলের আঘাতে মারা গেছেন। তবে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় বলে এসেছে তারা ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটাবে। নয়াপল্টন অফিসের সামনে ১০-২০ হাজার মানুষ ধরে। তারা যাতে ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটিয়ে বড় সমাবেশ যাতে করতে পারে, সেজন্য তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানে যেতে অনীহা প্রকাশ করলে মিরপুরের পল্লবী মাঠ, কালশী মাঠ, যেখানে বিএনপি ইতোপূর্বেই সমাবেশ করেছে অথবা ইজতেমার মাঠ, বাণিজ্য মেলার মাঠ তাদের ব্যবহার করার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা দেয়।
তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার ক্ষেত্রে আমরা বিএনপিকে কখনও বাঁধা দেইনি। সেটির প্রমাণ হচ্ছে, সারাদেশে তারা সফলভাবে ৯টি বড় সমাবেশ করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে সরকার সর্বোতভাবে সহায়তা করেছে। বিএনপি যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারে, এজন্য আমরা দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম, যাতে তাদের উস্কানির মুখেও তারা ধৈর্য্য ধরে। কিন্তু বিএনপি দেশে শান্তি চায় না বলেই গতকাল বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে, তাণ্ডব ঘটিয়েছে।
১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রগুলো আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাব। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তারা যে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে এবং এখন বাস-ট্রাকে আগুন দিয়ে আবার মানুষের অধিকার হরণ করছে- সেগুলো আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে জানাব।