পদ ছাড়ছেন না কমলাপুর রেলওয়ে স্কুলের অবৈধ প্রধান শিক্ষক

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

রাজধানীর কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল এন্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক স্তর সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হলেও প্রতিষ্ঠানটির ১১ শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। অবসরে যাওয়ার সময় হলেও ৩৫ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক পদে থাকা মো. আব্দুল আলিম পদ ছাড়ছেন না। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পদ আঁকড়ে থাকা ষাটোর্ধ্ব প্রধান শিক্ষকের এমপিওর আবেদনও বিবেচনায় নিচ্ছে না মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অবৈধ প্রতিষ্ঠান প্রধানের কারনে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলছেন, চলতি বছরে ২৩ এপ্রিল মো. আব্দুল আলিমের বয়স ষাট পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু তিনি দায়িত্ব ছাড়ছেন না। দাবি করছেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়েছেন। কিন্তু তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আবেদন করলেও তা বাতিল হয়েছে অনেক আগেই। এ পরিস্থিতিতে আমাদের এমপিওভুক্তি আটকে রয়েছে। কারণ, অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক পদে থাকা আব্দুল আলিমের আবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বিবেচনা করছে না। এ পরিস্থিতিতে এমপিওভুক্ত হতে না পেরে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক-কর্মচারীরা বিপাকে পড়েছি। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মো. আব্দুল আলিম প্রধান শিক্ষক পদে পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু গত ২০ আগস্ট তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে অসম্মতি জানিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। 

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, মো. আব্দুল আলিমের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে অসম্মতি জানিয়ে করা আবেদনকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি রিট করেছেন। 

এদিকে ঢাকা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ষাটোর্ধ্ব প্রধান শিক্ষক পদ না ছাড়ায় বোর্ডের কলেজ পরিদর্শন শাখা থেকে প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডির কো-অপ্ট সদস্য সাজ্জাদ হোসেনকে শোকজ করা হয়েছে।  

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র বলছে, রাজধানীর কমলাপুর শেরে বাংলা রেলওয়ে স্কুল এন্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করার বিষয়টি অধিদপ্তরের নজরেও এসেছে। কিন্তু ষাটোর্ধ্ব অধ্যক্ষ পদে থাকায় তার অগ্রায়ণ করা আবেদন বিবেচনার সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয় মো. আব্দুল আলিমের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আবেদনে অসম্মতি জানিয়েছেন। তিনি তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছেন। তাই ওই শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির বিষয়য়ে আইন শাখার মতামত চাওয়া হয়। আইন উপদেষ্টা মনে করছেন, ষাটোর্ধ্ব প্রধান শিক্ষকের কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের দুর্ভোগ কাম্য নয়। তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বা সিনিয়র শিক্ষকের স্বাক্ষরে এমপিওভুক্তির আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়টি আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। 

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগও আছে। তিনি বেশ কিছুদিন এ অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। 

শিক্ষকরা বলছেন, ষাটোর্ধ্ব প্রধান শিক্ষকের কারণে এ ভোগান্তি। আমরা এমপিওভুক্ত হতে চাই। তাকে প্রধান শিক্ষককে পদ থেকে সরাতে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। 

এসব বিষয়ে জানতে ষাটোর্ধ্ব প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আলিমের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলেও তিনি বলেন, আমি রিট করলে আদালত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে অসম্মতি জানিয়ে জারি করার মন্ত্রণালয়ের আদেশ আদালত স্থগিত করেছেন। তাই পদ ছাড়ছি না। আর আমাকে পদে রাখতে ৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন। তাই পদ ছাড়তে পারছি না। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাই। তখন থেকেই এ দায়িত্বে আছি। প্রতিষ্ঠানের জমি ও এমপিওভুক্তি সব করে দিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022759437561035