জাপানে এখন জন্মহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত সপ্তাহে একটি নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছেন। নীতিমালায় শিশু সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটি নেয়া পুরুষ কর্মীদের সংখ্যা বাড়ানোর অঙ্গীকার করা হয়েছে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জাপানে এখন পিতৃত্বকালীন ছুটি নেয়া পুরুষ কর্মীদের সংখ্যা ১৪ শতাংশ। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এটি ৫০ শতাংশে এবং ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ৮৫ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করে নীতিমালা ঘোষণা করেছে জাপান সরকার।
তবে এ নীতিমালা অনুমোদনের পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দেশটিতে। পোজে নামের একটি শ্রমিক সংগঠনের সদস্য মাকোতো ইওয়াহাশি বলেছেন, সরকারের উদ্যোগটি ভালো। তবে অনেক জাপানি পুরুষ তাঁদের কর্মক্ষেত্রের নিয়োগকর্তাদের অসহযোগিতামূলক আচরণের কারণে এ ধরনের ছুটি নিতে ভয় পান।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দে জাপানের সংসদে পাস হওয়া একটি বিল অনুযায়ী জাপানি পুরুষেরা চার সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটি পেয়ে থাকেন। কিন্তু এ ধরনের আইন থাকা সত্ত্বেও অনেকে পিতৃত্বকালীন ছুটি উপভোগ করতে অনীহা প্রকাশ করেন। কারণ এ ধরনের ছুটি তাঁদের কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে তাঁরা ভয়ে থাকেন।
ইওয়াহাশি বলেন, জাপানে মাতৃত্বকালীন এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি গ্রহণকারী কর্মীদের প্রতি বৈষম্য করা বেআইনি। তারপরও অনেক প্রতিষ্ঠানে বৈষম্যমূলক আচরণের চর্চা দেখা যায়। বিশেষ করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের অবস্থা বেশ নাজুক। তাঁরাই বেশি বৈষম্যের শিকার হন।
ইওয়াহাশি আরও বলেন, পিতৃত্বকালীন ছুটিতে সামান্য পরিবর্তনের এই নীতিমালা জন্মহারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারবে না।
টোকিওর মেইজি ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক হিসাকাজু কাতো বলেন, বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে পিতৃত্বকালীন ছুটির চর্চা রয়েছে। তবে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের চর্চা কম। কারণ ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করে, এ ধরনের ছুটি দিলে তারা কর্মী সংকটের মধ্যে পড়বে।
গত সপ্তাহে একটি সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ সমস্যাগুলো স্বীকার করেছেন এবং ছোট ও মাঝারি আকারের উদ্যোগগুলোর জন্য ভাতা প্রদানের বিষয়ে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আগামী জুনে বার্ষিক নীতির ব্লুপ্রিন্টে এ ব্যাপারে বিশদ ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।