সম্প্রতি কিছু কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়ার সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি নজরে এসেছ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি)। সংবাদ প্রকাশের ঘটনাকে ‘নেতিবাচক ও ভুল বার্তা’ বলছে এবং এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ইউসিজির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, স্বৈরাচার আমলে দেশের সব প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারপন্থি এবং তোষামোদকারী ব্যক্তিদের পদোন্নতি ও পদোন্নয়ন দিয়ে উচ্চপদে উন্নীত করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিতান্ত অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রকারান্তরে ধ্বংস করা হয়েছে।
দেশের উচ্চশিক্ষার দেখভালকারী শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনেও (ইউজিসি) সুদীর্ঘ ১৫ বছর স্বৈরাচারপন্থি এবং তোষামোদকারী ব্যক্তিদের কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়মনীতি বরখেলাপ করে পদোন্নতি ও পদোন্নয়ন দেয়াসহ সিন্ডিকেট আকারে নানান সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়ে আসছে।
অন্যদিকে যোগ্যতাসম্পন্ন, ভিন্ন মতাদর্শী এবং প্রতিবাদী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি/ পদোন্নয়নসহ প্রাপ্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদের প্রতি ইউজিসি কর্তৃপক্ষ বরাবরই রক্তচক্ষু প্রদর্শন করেছে। সুযোগ্য ও জ্যেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সেইসব কর্মকর্তাদের বারবার পদোন্নতির মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও তাদেরকে অযাচিত ও বিব্রতকরভাবে পদোন্নতি দেয়া হয়নি, তাদেরকে কর্মবিহীন রেখে পারফরম্যান্স প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া হয়নি এবং কোনো ক্ষেত্রে তাদের গুণগত মানসম্পন্ন কাজের কৃতিত্বের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি এবং নিপীড়নমুলক আচরণ করা হয়েছে যা তারা মুখ বুজে সহ্য করেছেন। এভাবে বঞ্চনা ও নিপীড়নের যে দায়মুক্তি ঘটেছে, তা স্মরণকালে কখনো দেখা যায়নি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগস্ট বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হলে অন্তর্বর্তী সরকার ইউজিসিতে নতুন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ করেছে। এই সদাশয় কর্তৃপক্ষ নিয়ম ও বিধি অনুসরণ করে স্বৈরাচার সময়ে বঞ্চনা ও নিপীড়নের শিকার সেইসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রথম পর্যায়ে একাংশকে তাদের প্রাপ্য পদোন্নতি/পদোন্নয়ন করেছে। সেই সঙ্গে বর্তমান সুযোগ্য কর্তৃপক্ষ সকলকে অফিসে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে দেশের উচ্চশিক্ষাকে গতিশীল করতে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করছে।
অতি সম্প্রতি বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি/পদোন্নয়ন প্রদান করার অব্যবহিত পরেই কিছু সংবাদ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ভুল বার্তা দিচ্ছে বলে আমরা মনে করি।
স্বৈরাচারের সময়ে যারা কর্তৃপক্ষের আশীর্বাদে উচ্চপদে উন্নীত হয়েছিলেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকতে পারেন। বিষয়টি ইউজিসি কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে এবং গঠনমূলকভাবে ইউজিসিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে।