পবিপ্রবি শিক্ষকের ফেসবুক পোস্ট ক্যাম্পাসে উত্তেজনা, তদন্ত কমিটি গঠন

দৈনিক শিক্ষাডটকম, পবিপ্রবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, পবিপ্রবি: তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শিক্ষক লিটন চন্দ্র সেন। পরে বিতর্কের মুখে ইতোমধ্যেই ওই পোস্ট সরিয়েও নিয়েছেন তিনি। তবে তার আগেই সেই পোস্টের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলছে, তার এ ধরনের পোস্ট ধর্মীয় উসকানিমূলক। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি ওই শিক্ষকের স্ট্যাটাসের মোটিভ জানতে তিন একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়য় প্রশাসন। 

জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল তাপপ্রবাহের সময় শিক্ষক লিটন চন্দ্র সেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, যেখানে দোয়া দুরুদ পড়লেই বৃষ্টি হয়, সেখানে এত তাপপ্রবাহ কেন? এরপর মুহূর্তেই ওই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। লিটন সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি হেলথ অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের শিক্ষক। 

এ ঘটনায় পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বরাবর একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। এতে বলা হয়, তার এই পোস্ট নিঃসন্দেহে ধর্মীয় উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করছে। যা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই পোস্ট নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুবই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ও বাদানুবাদ শুরু হয়েছে। যার পরিণতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ বলেন, আমরা শিক্ষকরা আমাদের সহকর্মীর এমন আচরণে মর্মাহত হয়েছি। এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। অবশ্য তিনি পরে তার পোস্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তবে বর্তমান ভাইরালের যুগে ওই পোস্ট মুহূর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, শিক্ষক সমিতির লিখিত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাতে পেয়েছে। প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই শিক্ষকের স্ট্যাটাসের মোটিভ জানতে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। কমিটিকে খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আমরা শিক্ষক লিটনের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কেন এ ধরনের লেখা ফেসবুকে লিখেছেন আমরা তার কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি যেটা বলেছেন, আমরা অনেকে অনেক ধরনের পাপ করছি। এ জন্য হয়তো স্রষ্টা আমাদের ওপর নারাজ। উনি এ ধরনের পজিটিভ সেন্স থেকে স্ট্যাটাস লিখেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. তাওহিদুল ইসলাম, বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খাদিজা খাতুন ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. সামসুজ্জোহা।

এ বিষয়ে অধ্যাপক লিটন চন্দ্র সেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো সারা পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও উত্তর মেলেনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা - dainik shiksha পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম - dainik shiksha ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় - dainik shiksha এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো - dainik shiksha প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055661201477051