বাংলাদেশে ন্যানোটেকনোলজি খাতের পথপ্রদর্শক এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. এ কে এম আব্দুল হাকিম আর নেই।
বুয়েটের ন্যানো ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক ভিজিটিং ড. হাকিম দেশের প্রথম ন্যানোটেকনোলজি ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা কয়েক সপ্তাহ আগে একনেকে অনুমোদিত হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি....রাজেউন)। তিনি ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি তাঁর স্ত্রী, দুই সন্তান ও তিন নাতি-নাতনিসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা তাঁর গবেষণার অসংখ্য গুণগ্রাহী, সহকর্মী ও শিক্ষার্থী রেখে গেছেন। তাঁর মেধাবী পুত্র মাহফুজ সাদিক বিবিসির সাবেক সাংবাদিক এবং বর্তমানে বিকাশের চিফ কমিউনিকেশন্স অফিসার। তাঁর মেয়ে অনন্যা নন্দিনী সুইডেনে লিনডে নর্থ ইউরোপ এর কোয়ালিটি স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে তাঁর নামাজ-এ-জানাজা শেষে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের পেছনে রায়ের বাজার কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
বিশ্বের নানা প্রান্তে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও পুনর্বার দেশে ফিরে বুয়েট ও পরমাণু শক্তি কমিশনে গবেষণার সাথেই প্রায় চার দশক ধরে যুক্ত ছিলেন ড. হাকিম। তিনি ন্যানো ম্যাটেরিয়াল বিষয়ে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী যাঁর ২০০টিরও বেশী গবেষণা নিবন্ধ বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় পিয়ার রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে ন্যানো ম্যাটেরিয়াল গবেষণায় নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের হাতেখড়ি হয়েছে।
তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ ফিজিকাল সোসাইটি-এর সহ-সভাপতি; ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আই আই এস সি), ব্যাঙ্গালোরের জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ এবং ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অবস্থিত ভিয়েতনাম একাডেমি অফ সায়েন্স এবং সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স প্রোগ্রাম (আই এস পি)-এর ভিজিটিং ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।