পরিবেশ অনুকূলে আসলে ১৫ দিন সময় দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পরিবেশ অনুকূলে এলেই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া কথা চিন্তা করবে। এ কথা বলেছেন ডা. শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি আরও বলেছেন, সেই পরিবেশে ১৫ দিন সময় দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হবে। 

বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন দেশের এই করোনা পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতি আপনারা সবাই অবহিত। প্রায় ১৪ লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা নেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম, এখনো আছে। ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আরও কয়েক লাখ লোকবল জড়িত। এত সংখ্যক মানুষকে আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না।’

তিনি বলেন, অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে তার ১৫ দিনের সময় দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হবে। যাতে পরীক্ষার্থীরাও জেনে প্রস্তুতি নিতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, অনুকূল পরিবেশ হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা চিন্তা করবে সরকার।

গত এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত থাকলেও করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। আর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষ্যমহীন শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা নিশ্চিহ্ন করে দিতে, বাস্তবায়ন করতে না দিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ৭৫ পরবর্তী প্রজন্মকে ইতিহাস সম্পর্কে পুরোপুরি অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে চেয়েছিল, ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সত্য কখনো ধামাচাপা দেয়া যায় না, তা প্রকাশিত হবেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নির্বংশ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তার দুই মেয়ে বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষ্যমহীন শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা নিশ্চিন্ন ঘাতকেরা তা নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।

৭৫ পরবর্তী প্রজন্ম বলতে পারবে না সে সময়টা কেমন ছিল। মায়েদের হাত ধরে বাবাদের সাথে দেখা করতে আমাদের কারাগারে যেতে হয়েছে। পরিবারগুলোর ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। ৭৫ পরবর্তী প্রজন্মকে পুরোপুরি অন্ধকারে রাখা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বিকৃত করে তার আদর্শকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বঙ্গবন্ধুকে হাতে ধরে রাজনীতি শিখিয়েছেন। নেতা নেতাকে চিনেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছাত্র নেতা, যুব নেতা ও পরে বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়ে উঠেছেন।

রাজনীতিতে একটা পরম্পরা এখনও আছে। গত ১০০ বছরের রাজনীতি বিচার করলে দুটি ধারা দেখতে পাওয়া যায়। একটি গণতান্ত্রিক, উদার মনোভাবের রাজনীতি, যেটা মূলধারা। অন্যটি তার উল্টো, তার বিপরীত একটি ধারা। যেখানে সংকীর্ণতা, কূপমণ্ডুকতা এবং ধর্মের নামে শোষণের একটা ধারা। উদার ধারায়, গণতন্ত্রের ধারায় আমারা দেখছি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সুভাষ বোসদের। তার পরে আছেন বঙ্গবন্ধু। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখছি শেখ হাসিনাকে। এই ধারাটির দিকে তাকালে বাংলাদেশের মূল ছবিটি স্পষ্ট হয়ে উঠে বলে জানান তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর নানা বিষয়ে সমালোচনা হয়। কিন্তু কি আশ্চর্য এক মানুষ তিনি! এমন কোনো দিক নেই যা নিয়ে তিনি ভাবেননি, কাজ করেননি। কোনো কিছুর কোনো অন্ধ অনুকরণ তিনি করেননি। তিনি যখন ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলেছেন তা কিন্তু ওয়েস্টার্ন ধাঁচের ধর্ম নিরপেক্ষতা নয়। তিনি আসলে যে অসাম্প্রদায়িক বাংলায় বড় হয়েছেন, তাকেই তিনি ধারণ করেছেন।

দীপু মনি বলেন, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন তিনি বলেছিলেন, আমার মাটির সঙ্গে, আমার মানুষের সঙ্গে, আমার কালচার, আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে, আমার ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করেই আমার ইকোনোমি সিস্টেম গড়তে হবে। তিনি আমাদের রাষ্ট্রটি দিয়ে, আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, সুনির্দিষ্ট স্বপ্ন দিয়ে গেছেন এবং বড় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়ে গেছেন। আজ তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি। আর বড় বড় স্বপ্ন দেখছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028882026672363