মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে (২০০৯ থেকে ২০১৬) টানা আট বছর লুটপাট করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সাবেক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুনের সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষা অধিদপ্তর ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেতারা। গত ১৫ বছর ফাহিমা খাতুন ও উবায়দুল মোকতাদিরের লোক হিসেবে শাহেদুল খবির, কামাল ও তাজিবসহ কয়েকজন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
অধিদপ্তর ও বোর্ডের স্থায়ী কর্মকর্তারা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেছেন, খুন ও লুটপাটসহ মোট ছয়টি মামলার আসামী মোকতাদির ও ফাহিমা খাতুন পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে খুন-খারাবি ও গোচারণ ভূমি অবৈধ দখল করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ছয়টি মামলা হয়েছে গত একমাসে।
গত ১৫ বছর শিক্ষা ক্যাডারের কারা শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তার একটা তালিকা তৈরি ও কৃত অপকর্মের তদন্তপূর্বক শাস্তি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ও নতুন শিক্ষা সচিবের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করা অভিযোগে বলা হয়, মন্ত্রণালয়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে অপ্রয়োজনীয় শত শত স্কুল-কলেজের অনুমোদন, জিপিএ ফাইভ বিক্রি এবং শিক্ষা অধিদপ্তরে টেন্ডার, নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিতে হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ফাহিমার চেয়ারম্যান ও ডিজি পদে থাকাকালে।
আরো পড়ুন :গোচারণ ভূমি ভরাট করে মোকতাদির ও ফাহিমার বিশ্ববিদ্যালয়
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলেছেন, টেন্ডার, এমপিওভুক্তিসহ লুটপাটের বিষয়ে বিচ্ছিন্নভাবে দুদকে একাধিক অভিযোগ ও তদন্ত শুরু হলেও আওয়ামী লীগ নেতা ও পলাতক মন্ত্রী মোকতাদিরের তদবিরে তা চাপা পড়ে যায়। দুদক থেকে সেই পুরনো ফাইলগুলো সামনে আনারও দাবি জানান তারা।
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে পাতানো ভোটে সংসদ সদস্য (এমপি) ছিলেন। সর্বশেষ নির্বাচনের পর সরকারের মন্ত্রিপরিষদে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পান। তিনি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ফাহিমা খাতুন ট্রেজারার। এলাকায় চাউর আছে, এটি মূলত তাদের স্বামী-স্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়। মূল মালিক উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী হলেও এটির নিয়ন্ত্রক তার স্ত্রী প্রফেসর ফাহিমা খাতুন।
একাধিক মামলার আসামী এই দম্পতি পলাতক থাকায় তাদের মতামতা জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।