পশ্চিমবঙ্গে কলেজে ভর্তিতে এবারই প্রথম কেন্দ্রীয় পোর্টাল চালু করেছে রাজ্য সরকার। তবে প্রথম দিনেই ওই পোর্টালে বিপত্তি। কখনও ‘ক্র্যাশ’ করেছে ওয়েবসাইট। আবার কখনও ‘ওটাপি’ আসেনি আবেদনকারীদের মোবাইলে।
গত সোমবার আবেদন শুরুর দিনে কাঁথি শহরের শ্রীরূপা সিনেমা হল সংলগ্ন একটি সাইবার ক্যাফেতে সকাল থেকেই পড়ুয়াদের দীর্ঘ লাইন ছিলো। ওই ক্যাফের মালিক তপন কুমার মান্না বলেন, প্রথমে ভর্তির ওয়েবসাইট খুললেও আবেদনকারীদের মোবাইলে বা ই-মেলে ওটিপি যাচ্ছিলো না। বিকেল নাগাদ অবশ্য ঘোষণা করা হয়, যে কোনও একটি ওটিপি হলেই আবেদনপত্র জমা করা যাবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর আর ওয়েবসাইটই খুলছিল না।
শহরের সরস্বতী তলা এলাকার আরেক সাইবার ক্যাফে মালিক জানান, দিনে হাতে গোনা ৫-৬ জনের আবেদন পত্র জমা করা গিয়েছে। তারপর আর কিছুতেই ওয়েবসাইট খোলেনি। একই অভিজ্ঞতা শোনাচ্ছেন রামনগরের পালধুইয়ের বাসিন্দা রাজা বেরা। তিনি বলেন, দুপুর থেকে রামনগর, এগরা, বালিসাই ছুটেছি। কিন্তু কোথাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারিনি।
পূর্ব মেদিনীপুরে ২১টি কলেজ রয়েছে। প্রায় সব ক’টি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। এছাড়া, মহিষাদলে মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এ বছর ৮ মে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়। তারপর দীর্ঘ টালবাহানার পর এ দিন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে পোর্টালে কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একজন ছাত্র বা ছাত্রী ২৫টি কোর্সে ২৫টি কলেজে সর্বাধিক আবেদন জমা দিতে পারবেন। কিন্তু ভর্তির টাকা দিতে পারবেন একটা মাত্র কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়েই। তবে এই পোর্টালে আবেদন করার জন্য দিতে হবে না কোনও মূল্য। প্রথম পর্যায়ে আবেদন করা যাবে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হবে আবেদন পর্ব। চলবে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত।
প্রথম দিনেই ভোগান্তি প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজের অধ্যক্ষ সংগঠনের সম্পাদক অমিত কুমার দে বলছেন, এদিন বিকেল থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোড়াতে ওটিপি সংক্রান্ত সমস্যা হলেও পরে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে কোনও একটি ওটিপি দিতে পারলেই কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে।
এই সমস্যা নিয়ে সরব বিরোদী দলগুলির ছাত্র সংগঠন। বামদের ছাত্র সংগঠন এসএফআই আগেই দাবি করেছিল যে, পোর্টালে সমস্যা আরও বাড়াবে।
এ দিন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, রাজ্যের নানা প্রান্তের হেল্প ডেস্ক থেকে অভিযোগ আসছে যে পোর্টাল কাজ করছে না। আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম। এই ধরনের কেন্দ্রীয় পোর্টালের পরিকাঠামো নেই এই সরকারের।
ডিএসও-র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পৃথকভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন নেওয়ার অধিকার দেওয়া হলে অনেক বেশি সুবিধে হত। পড়ুয়াদের ভোগান্তির কথা মানছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-ও। তাদের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শতদল বেরা বলেন, প্রথম দিন সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। তবে শিগগিরই প্রযুক্তিগত সমস্যা সম্পূর্ণ মিটে যাবে বলেই আশাবাদী।