সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জনতা ব্যাংক থেকে গ্রাহকের ‘প্রায় ৫ কোটি’ টাকা নিয়ে উধাও হওয়া অফিস সহকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ভোরে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব মিয়াপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আওলাদ হোসেন রঞ্জু আকন্দ (৪০) শাহজাদপুর পৌরসভার পাড়কোলা মহল্লার বাসিন্দা। এ ছাড়া তিনি উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, কোরবানির ঈদের ছুটির পর থেকে রঞ্জু পালিয়ে ছিলেন; অফিসে আসেননি। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রঞ্জু গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “রঞ্জু বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও বিভিন্নভাবে নেওয়া ৩৫ লাখ টাকার ঋণের সুদ দিতে গিয়েই এমন কাজে জড়িয়েছেন বলে জানান। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ২০ হাজার ২০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখার ব্যবস্থাপক জেহাদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও বলেন, ২০০৩ সালে জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখায় রঞ্জু অফিস সহকারী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে (কাজ নেই, বেতন নেই) যোগ দেন। এরপর ২০১৬ সালের দিকে তিনি ঋণগ্রস্ত হলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ১৫ লাখ টাকা নেন।
এ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বিভিন্ন এনজিও থেকে আরও প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ নেন। তাকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “এ অবস্থায় ২০২২ সালের শুরু থেকে গ্রাহকদের কাছ থেকে জালিয়াতি করে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। পরে পরিচিত গ্রাহকদের টার্গেট করেন এবং বেশ কিছু লোককে অ্যাকাউন্ট খুলে দেন।
“পরে গ্রাহকরা টাকা তুলতে এলে তারা যে পরিমাণ টাকা লিখত তার বাম পাশে গোপনে রঞ্জু একটি ডিজিট বসিয়ে বেশি টাকা তুলে নিতেন।”
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “আবার তিনি মাঝে মাঝে চেক নিজের কাছে রেখে তার কাছে থাকা টাকা দিয়ে দিতেন গ্রাহকদের। পরে সুবিধামত সময়ে চেক দিয়ে বেশি টাকা উত্তোলন করতেন রঞ্জু।”
গ্রাহকদের ৫ কোটি টাকা উধাও হওয়ার বিষয়ে জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) জাহিদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “টাকার পরিমাণ এত বেশি হবে না। আমরা এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছি। এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব না।”