পাঁচ বছর পরেও ঈদ আনন্দ নেই নুসরাতের পরিবারে

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ফেনী |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয়ে মারা যাওয়া মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পাঁচ বছর পরেও তার পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ। 
নুসরাতের মৃত্যুর পর থেকে মেয়ে হারানোর হাহাকার এখনো কাটেনি তার বাবা-মায়ের। পরিবারটির দৃষ্টি এখন দেশের উচ্চ আদালতে। 

অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয়ে মারা যাওয়া মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিকেলে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় কবর জিয়ারত করেন নুসরাতের পরিবার ও এলাকাবাসী। 

নুসরাত জাহানের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছে পিবিআইয়ের সদস্যরা

এসময় পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র পাল, পরিদর্শক সত্যজিৎ বড়ুয়া, উপপরিদর্শক অমির ক্রান্তি দে, সহকারী উপপরিদর্শক হিরন কুমার দে–সহ ১০ সদস্যের একটি দল নুসরাতের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।  

এ সময় কবর জিয়ারতে অংশ নেন নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান, ছোট ভাই রাশেদুল হাছান, স্থানীয় এলাকাবাসী ও পিবিআইয়ের সদস্যরা। সুভাষ চন্দ্র সাংবাদিকদের বলেন, পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশে প্রতিবছরই নুসরাতের কবরে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তার পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করা হয়।
কবর জিয়ারত শেষে পিবিআইয়ের সদস্যরা নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে তার মা শিরিনা আক্তারের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

নুসরাতের বাবা এ কে এম মুসা মানিক বলেন, ‘দেশের সবার কাছে আমার মেয়ের জন্য দোয়া চাই। আমাদের দৃষ্টি এখন উচ্চ আদালতের দিকে। আদালতের রায়ের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতে যেমন আমাদের পাশে ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। মেয়ে না থাকায় কোনো ঈদের আনন্দ নেই।’

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদরাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই বছরের ২৮ মে পিবিআই তদন্ত শেষে মাদরাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। একই বছরের ২৪

অক্টোবর রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023429393768311