মাদরাসা থেকে পালাতে সাততলা ভবনের ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার চেষ্টা করছিল এক ছাত্র। কিন্তু ছয়তলায় এসে বাধে বিপত্তি এরপর আর সে নামতে পারছিল না। বিষয়টি দেখে স্থানীয় একজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করে সাহায্য চান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করেন।
এমনটাই ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের খৈয়াসার এলাকার সালমা সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদরাসায়। গতকাল শুক্রবার সকালে পালানোর চেষ্টা করা কিশোরকে ১২টার দিকে উদ্ধার করা হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালের দিকে ওই কিশোর মাদরাসা ভবনের সাততলার ছাদে ওঠে। এরপর সে ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে। ছয়তলা পর্যন্ত পৌঁছে আটকে যায়। একটা পর্যায়ে আর নিচে নামতে পারছিল না। এর মধ্যে ভবনের বাইরের লোকজন এ দৃশ্য দেখে মাদরাসায় এসে বিষয়টি জানান। তখন মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা ভবনের ছাদে গিয়ে ওই কিশোরকে আটকে থাকতে দেখেন। এরপর মাদরাসা থেকে প্রথমে ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে সাহায্য চাওয়া হয়। পরে জেলা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক নিউটন দাসের নেতৃত্বে একটি দল খৈয়াসার এলাকায় পৌঁছায়। ফায়ার ফাইটার আলমগীর হোসেন ছয়তলা পর্যন্ত উঠে পাইপ থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে নিচে নামান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশনমাস্টার মো. নাজমুল আলম বলেন, খবর পেয়ে বেলা ১১টা ৩ মিনিটে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ষষ্ঠ তলার পাইপে মাদরাসাছাত্রকে আটকে থাকতে দেখেন। দীর্ঘ পৌনে এক ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ওই মাদরাসাছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফ নেওয়াজ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নাজমুল আলম ও সদর থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা ওই কিশোরকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।
সালমা সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ বায়েজিদ আহমেদ জানান, ভবনের সপ্তম তলায় মাদরাসা। সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখন ওই ছাত্র ছাদে ওঠে। একপর্যায়ে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তাকে উদ্ধারের পর বিষয়টি পরিবারকে জানানো হয়। পরে বিকেল চারটায় পুলিশ সদস্যদের সামনেই মায়ের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। মা তাকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ওই কিশোরের বাড়ি সরাইল উপজেলায়।