মানিকগঞ্জে পুলিশের তৎপরতায় মানব পাচার থেকে দুই শিক্ষার্থী রক্ষা পেয়েছেন। নিখোঁজের চার দিন পর পুলিশ দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং পাচারকারী দলের এক নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় মামলা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
এদিকে উদ্ধার হওয়া নবম ও অষ্টম শ্রেণির মাদরাসার ওই দুই শিক্ষার্থী জানায়, সাটুরিয়া উপজেলা গোলড়া গ্রামের লেবু মিয়ার মেয়ে নুসরাত জাহান তানজিনা (২০) অনেক দিন ধরে ঢাকায় চাকরি করেন। পরিচয় থাকার সুবাদে নুসরাত তাদের ঢাকায় কাপড়ের দোকানে চাকরির কথা বলে। নুসরাতের কথায় তারা দু’জন ঢাকা গিয়ে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। নুসরাতের পরিচিত হৃদয় নামে এক যুবকের সাথে গত ৪ মার্চ দুপুরে তারা ঢাকা চলে যায়। ঢাকায় গিয়ে তারা হৃদয়ের বাসায় ওঠে। একদিন পর হৃদয়তাদের বোরকা পড়িয়ে একটি হোটেলে নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে। এভাবে তিনদিন তাদের ওপর অত্যাচারের পর নুসরাত জাহান তানজিনা মোবাইল ফোনে হৃদয়কে তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলেন। গত বুধবার সন্ধ্যার পর হৃদয় তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। এরপর গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে নামার পর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান জানান, সাটুরিয়াতে একই দিনে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে জানাতে পারেন নুসরাত নামে এক নারী ওই দুই শিক্ষার্থীকে চাকুরির লোভ দেখিয়ে ঢাকায় পাচার করেছে। উদ্ধার হওয়ার শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তাদেরকে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হয়েছে। এই ঘটনায় উদ্ধার হওয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। উদ্ধার হওয়া দুই শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এই ঘটনায় নুসরাত জাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হৃদয়কে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। এই চক্রটি গ্রামের সহজ সরল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে দেহব্যবসা, পরে দেশের বাইরে পাচার করে দেয়।