পাঠ্যবই নিয়ে ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না : আরেফিন সিদ্দিক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুল হয়নি সেসব বিষয় নিয়েও অপপ্রচার লক্ষ করা যাচ্ছে। অন্য দেশের বইয়ের ছবি দিয়ে আমাদের দেশে প্রচার করা হচ্ছে। যেটার কোনো অস্তিত্ব বাস্তবে নেই। তাই পাঠ্যবই নিয়ে ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।

পাঠ্যবইয়ে ভুল হয়েছে, সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও স্বীকার করেছে। ভুল সংশোধন করে অতিদ্রুত ছেলেমেয়েদের হাতে বই পৌঁছে দেবে বলে অঙ্গীকার করেছে। এ লক্ষ্যে দুটি কমিটিও গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, একটি কমিটি ভুল সংশোধন করবে। অন্যটি পাঠ্যপুস্তকে ভুল-ভ্রান্তি করার পেছনে ইচ্ছাকৃত কারোর অবহেলা আছে কি না সেটি দেখবে।

বই নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সেই কার্যক্রম দেখে বোঝা যায় যে, পাঠ্যপুস্তকের ভুলকে সরকারবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করার অপচেষ্টা তারা করছেন। সেই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

পাঠ্যপুস্তকে যেসব ভুল আমরা লক্ষ করেছি সেগুলো অবহেলাজনিত বলে মনে হয়েছে। সাধারণভাবে এ ধরনের ভুল হওয়ার কথা নয়। যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তারা এ ধরনের ভুল করবেন এটা মনে হয় না। এটা হয়তো চোখে এড়িয়ে গিয়েছে। অথবা যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তারা বিষয়টি দেখেননি। আমি মনে করি ভবিষ্যতে যাদের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে দায়িত্ব দেয়া হবে, তাদের এমনভাবে বাছাই করা হোক, যেন সেসব শিক্ষকরা বাইরের কাজে অনেক বেশি ব্যস্ত না থাকেন। কারণ একজন শিক্ষক স্বাভাবিকভাবেই অনেক কমিটির দায়িত্বে থাকেন। তাদেরই আবার পাঠ্যপুস্তকের দায়িত্ব দেয়া হলে তারা যথাযথভাবে সময় দিতে পারেন না। এটা একটা বড় সমস্যা বলে আমি মনে করি। অনেক শিক্ষক আছেন যারা অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকেন না। কম ব্যস্ত মানুষ কিন্তু নিবেদিত, এমন শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হলে ভুলের মাত্রা কমানো সম্ভব হবে।

পাঠ্যবইয়ে ভুল হলে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা ভুলকেই সঠিক মনে করে। শিক্ষকরা যতই শুদ্ধটা বলুক না কেন, শিক্ষার্থীরা মনে করে পাঠ্যবইয়ে যেটা আছে সেটাই সঠিক। পাঠ্যবইকে তারা ধর্মগ্রন্থের মতো মর্যাদা দিতে চেষ্টা করেন। সেই কারণে পাঠ্যবইয়ের দায়িত্বে যারা থাকবেন তাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন রয়েছে।

প্রতিবছরই পাঠ্যবইয়ে কিছু ভুল-ত্রুটি থাকে। এবার ভুলের মাত্রা অনেক বেশি বলে মনে হয়েছে। বই বিতরণের পর থেকেই দেশের মূল ধারার গণমাধ্যমে একের পর এক তথ্য উঠে এসেছে। আমার কাছে মনে হয় ভুল হয়েছে বিধায় গণমাধ্যমে সেটা প্রকাশ করেছে। আবার ভুল প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকেও তা সংশোধনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেটিও প্রশংসনীয় কাজ। ভুল হলে তাৎক্ষণিকভাবে স্বীকার করা, পরিপ্রেক্ষিতে সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। সেই পদক্ষেপটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়েছে বলে লক্ষ করেছি।

লেখক : আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040121078491211