যশোরের কেশবপুরে ৭০টিসহ জেলার প্রায় ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো পানির নিচে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার মতো রাস্তা নেই। ফলে, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ ভোগান্তি লাঘবে তৈরি করতে হয়েছে বাঁশের সাঁকো।
টানা বৃষ্টিতে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে অসংখ্য বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট। এরমধ্যে কেশবপুরও রয়েছে। টানা বৃষ্টি আর নদ-নদীর উপচেপড়া পানিতে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার ৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়। জলাবদ্ধতার কারণে পানি দূষিত হয়ে গেছে। ওই দূষিত পানির মধ্যে দিয়ে অনেক স্কুল বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে। আবার অনেক স্কুলে শিক্ষার্থীদের বদ্ধ পানির ভেতর দিয়েই বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে।
উপজেলার পিবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে সড়ক থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত ১১০ হাত দৈর্ঘ্যরে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ওই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে। ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফা খাতুন ও জিহাদ হোসেন জানায়, স্কুলের মাঠসহ চারপাশে পানি। শিক্ষকদের উদ্যোগে তাদের যাতায়াতের জন্য বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক রাজু আহমেদ বলেন,‘প্রায় দু’মাস স্কুলের বারান্দাসহ মাঠে পানি। পানির ভেতর দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের চলাফেরা করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছিল। শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের যাতায়াতের জন্য দু’দিন আগে ২০টি বাঁশ দিয়ে রাস্তা থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে।’
উপজেলার পাঁজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাঁটু সমান পানির ভেতর দিয়েই যাতায়াত করছে। ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল ব্যানার্জী বলেন,‘জলাবদ্ধ পানির ভেতর দিয়ে একমাসের অধিক দিন ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় কুমার ব্রহ্ম বলেন,‘টানা বৃষ্টিতে শ্রেণীকক্ষ, খেলার মাঠ ও শৌচাগার তলিয়ে যায়। বর্তমানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
একই অবস্থা অভয়নগর উপজেলায়ও। বিশেষ করে ভবদহ এলাকার অবস্থা ভয়াবহ। এই উপজেলায় ১০টির মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানির নিচে। মণিরামপুর উপজেলার কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানির নিচে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সবমিলিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে সময় যাচ্ছে কয়েকশ’ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর।