মাছুম বিল্লাহ, দৈনিক শিক্ষাডটকম: নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে যতো আলোচনা, তার মধ্যে অন্যতম হলো- পাবলিক পরীক্ষা কীভাবে গ্রহণ করা হবে, তার স্বরূপ কী হবে এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতীকের মাধ্যমে যে মূল্যায়ন সেটি কীভাবে সমন্বয় হবে।
সচেতন অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি বারবার তুলছেন বিভিন্ন ফোরামে। আমরা যারা শিক্ষা নিয়ে মাঠে কাজ করি, শিক্ষা বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করি, তারা কিন্তু বারবার বলে আসছি, নতুন শিক্ষাক্রমকে অর্থবহ করতে হলে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষা থাকতেই হবে।
নতুন শিক্ষামন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। তিনি নতুন কারিকুলামে মূল্যায়নসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে একাধিক মিটিং করেছেন এনসিটিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে। শিক্ষাবিদ, অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ, অসন্তোষ ও লিখিত পরীক্ষা যুক্ত করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই তিনি নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নপদ্ধতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন। গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যায়ন পদ্ধতি ও নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি গঠনের কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন কমিটি একটি সুপারিশও করে। যেখানে বলা হয়েছে, যোগ্যতা ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা রাখা এবং এই দুই অংশের মধ্যে আন্তসম্পর্ক বজায় রাখার কথা। হাতে-কলমে যে মূল্যায়ণ হবে, তার ওয়েটেজ বা গড় ভারিত্ব হবে ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে, লিখিত অংশের ওয়েটেজ হবে ৫০ শতাংশ। চূড়ান্ত মূল্যায়নে সনদ/ট্রান্সক্রিপ্টের সাত পর্যায়ের স্কেলে যোগ্যতা ও পারদশির্তার সূচক অভিভাবক ও অংশীজনের অবহিত করারও সুপারিশ করেছে কমিটি।
তারপর ৫০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষার কথা বলা হলো মার্চ মাসে, এপ্রিলেও একই কথা। গত ১৩ মে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক সভায় এ নিয়ে আলোচনা ও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়, নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষার সামষ্টিক মূল্যায়নের লিখিত অংশের ওয়েটেজ হতে যাচ্ছে ৬৫ শতাংশ। আর কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ হবে ৩৫ শতাংশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা।
এই ৬৫ শতাংশ পরীক্ষার মার্কিং কি রকম হবে? সেটি কি মার্কিংই থাকবে, নাকি গ্রেডিং হবে, নাকি নম্বর সিম্বলে রূপান্তরিত করা হবে?
যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রম চালুর পর এ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের যেসব আলোচনা তার সবই লিখিতভাবে অর্থাৎ থিওরিটিক্যালি পজিটিভ, ভীষণ পজিটিভ। তবে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া জরুরি। আর এটা যতো দ্রুত হয় ততোই মঙ্গল।
লেখক: ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষক