দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষক সংকট কাটছেই না। বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ও চারুকলা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশে যোগ্য প্রার্থী পাচ্ছে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। মাদরাসার আরবি বিষয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্যও প্রার্থী সংকট প্রকট। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয়ে স্কুল পর্যায়-২ এ নিবন্ধিত প্রার্থীরও ঘাটতি রয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা এনটিআরসিএর কর্তারা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেছেন, নিবন্ধিত যোগ্য প্রার্থীর সংকট থাকায় কয়েকদফা শিক্ষক নিয়োগ দিয়েও এসব পদ পূরণ করা যায়নি। তাই এ সংকট কাটাতে শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাসের হার বাড়ানোর চিন্তা করছে শিক্ষা প্রশাসন। এজন্য প্রিলিমিনারি প্রশ্নের ধরন বদল ও বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। গত সপ্তাহে এনটিআরসিএতে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এ প্রস্তাব করা হয়।
শিক্ষক হতে আগ্রহী অনেক প্রার্থী প্রিলিমিনারির গণ্ডিই পেরুতে পারেন না। সর্বশেষ ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রায় ১২ লাখ প্রার্থী অংশ নিলেও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১ লাখ ৫১ হাজারের কিছু বেশি। কর্তাদের ধারণা, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান প্রশ্নের প্রিলিমিনারির গণ্ডি পেরুতে না পারায় এসব বিষয়ের শিক্ষক হতে আগ্রহী প্রার্থীদের অনেকেই নিবন্ধিত হতে পারেননি।
গত সপ্তাহের কর্মশালায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মাদরাসায় আরবি বিষয়ের শিক্ষক সংকট আছে। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতায় এসব পদ বছরের পর খালি থাকছে। এছাড়া আইসিটি ও চারুকলা বিষয়ের শিক্ষকও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তররের পক্ষ থেকে প্রিলিমিনারিতে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন সংযোজন করে প্রার্থীদের পাস বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আর প্রশ্নের ধরনও বদলানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করা হলে প্রার্থীরা সেগুলোতে নম্বর তুলে প্রিলিমিনারিতে পাস করতে পারবেন। ফলে বেশি শিক্ষক নিবন্ধিত হতে পারবেন। যা সংকট কাটাবে। প্রশ্নের ধরন বদলানো যেতে পারে। বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নগুলো অপশনাল হিসেবেও রাখা যেতে পারে, যেমনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে হয়। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের সঙ্গে একটি অংশে আলাদা আলাদা বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন থাকবে। যে প্রার্থী যে বিষয়ে তিনি ওই বিষয়ের প্রশ্নগুলোর উত্তর করবেন।
এনটিআরসিএর সদস্য (অর্থ-প্রশাসন) এস এম মাসুদুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আমরা সাধারণত প্রার্থীদের ‘ডেপথ অব নলেজ’ দেখতে চাই। এজন্য বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানে একটি কমন প্রশ্নে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়া হয়। পরে লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থীদের বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নে ধরন বদলানোর ব্যাপারে আমরা বোর্ড সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। প্রার্থীদের জন্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যেটা ভালো হয় সেভাবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে, অযোগ্য প্রার্থীকে জোর করে পাস করিয়ে নিবন্ধিত করার কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না এনটিআরসিএ।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।