দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুড়িগ্রাম : এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে আলম মিয়া। তবে তার বন্ধুদের সঙ্গে বা অন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে না সে। তার পরীক্ষা নেয়া হয় পৃথক একটি কক্ষে। পরীক্ষার কক্ষেও পা বাঁধা থাকে শিকল দিয়ে।
আলম মিয়া কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। ভূরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে সে। তিলাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আলম।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আলমের বাবা একজন অটোরিকশা চালক। আলমও মাঝে মাঝে বাবার সাহায্যের জন্য অটোরিকশাটি চালাতেন। পরীক্ষা শুরুর কয়েকদিন আগে সোনাহাট স্থলবন্দরে যাওয়ার জন্য তার সঙ্গে চুক্তি করেন চার যাত্রী। এ সময় তারা সামুসা খেতে দেন আলমকে। এরপর থেকে আলম অস্বাভাবিক আচারণ করতে শুরু করেন। তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেন স্থানীয় অন্য অটোরিকশাচালকরা।
পরিবারের দাবি, যাত্রীদের দেয়া সামুসার সঙ্গে কিছু মেশানো ছিল। যার কারণে আলম সেটি খাওয়ার পর থেকে অস্বাভাবিক আচারণ করতে থাকে। অটোরিকশা চুরির উদ্দেশ্যেই এমনটি করা হয়েছিল।
আলম মিয়ার বাবা আব্দুল আলিম জানান, দিনে এক পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয় আলমের। রাতে হাতে ও পায়ে শিকল বেঁধে বিছানায় শুয়ে রাখা হয়। তাকে রংপুরে একজন ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ওষুধও খাওয়ানো হচ্ছে নিয়মিত। তবে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আচারণ করছে না আলম। টাকার জন্য উন্নত চিকিৎসা দিতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।
পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব হারুন উর রশীদ বলে, ছেলেটি (আলম) অসুস্থ হওয়ায় একটি আলাদা কক্ষে তার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। খাতায় লিখলেও মাঝে মাঝে চিৎকার করে, অশান্ত হয়ে যায় এবং লিখতে চায় না।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ এস এম সায়েম বলেন, ছেলেটির সাথে কথা বলেছি, আমার মনে হয় সে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসায় সে ভালো হতে পারে।