গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মো. নূরুল ইসলাম (৫০) নামের এক শিক্ষকের হাত-পায়ের রগ কেটে পুকুরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এর আগে তাঁর শরীরে নানা স্থানে কোপায় তারা। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বারিষাব-আমরাইদ সড়কের নূরার ব্রিজ এলাকায় এ হামলা হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নূরুল ইসলামের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে পারিবারিক সূত্র জানায়, তিনি এখনও আশঙ্কামুক্ত নন।
নূরুল ইসলাম বিএসসি বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভ খান আ. হাই সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। এ ছাড়া তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করেন। বারিষাব লালে সরকার বাড়ি জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই মসজিদের সামনের মাঠ দিয়ে ইটের সোলিং করা সড়ক নির্মাণ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে স্থানীয় দুটি পক্ষের বিবাদ চলছে। সম্প্রতি একটি পক্ষ মোটা টাকা খরচ করে সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে আনে সেখানে। তাদের উপস্থিতিতে ওই সড়ক নির্মাণ করা হয়। পরদিনই মসজিদ কমিটির সভাপতি নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে এলাকার কয়েকশ লোক ওই সড়ক ভেঙে দেন। এর পর থেকে দুটি পক্ষ মারমুখী অবস্থায় রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, চরদুর্লভ খান আ. হাই সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গেও নূরুল ইসলামের বিরোধ রয়েছে। দুটি দ্বন্দ্বের জের ধরে তাঁর ওপর হামলা হতে পারে। দুই পক্ষের যৌথ বা কোনো একটি পক্ষের আক্রমণের শিকার হতে পারেন তিনি।
ছোট ভাই আহসানউল্লাহ সরকার বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বেলতলী বাজার থেকে হোমিওপ্যাথির দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন নূরুল ইসলাম। নূরার ব্রিজের পূর্ব পাশে সাত-আট সশস্ত্র দুর্বৃত্ত গতিরোধ করে তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় তাঁর কোমরের নিচের অংশ, ডান হাতের দুটি অংশ ও বাঁ হাতের একটি অংশের হাড় ভেঙে যায়। হামলাকারীরা তাঁকে কোপাতে থাকে। ডান হাতের কবজির রগ, ডান পায়ের রগ ও ডান হাঁটুর নিচে মাংসপেশি কেটে দুর্বৃত্তরা পাশের পুকুরে ফেলে চলে যায়।
আহসান আরও জানান, পথচারীরা তাঁর ভাইকে উদ্ধার করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সোমবার বিকেলে কয়েক ঘণ্টা ধরে সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে তিনি এখনও আশঙ্কামুক্ত নন।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম লুৎফুল কবির বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা জেনেছেন, মসজিদের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে ওই এলাকার দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। আহত শিক্ষকের পরিবারের কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তারা বিষয়টি তদন্ত করবেন। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।