পিএসসি যেভাবে দ্রুতগতিতে গণিত লিখিতের সাত হাজার খাতা দেখলো

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: দীর্ঘ সময় নিয়ে ফলাফল দেয়া হয় বিসিএসের। তবে এবার নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষার খাতার দেখার কৌশল নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আশা করা হচ্ছে নতুন এ কৌশল অবলম্বনে স্বল্প সময়ে ফলাফল দেয়া যাবে।

সম্প্রতি পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, জট কমাতে এবার ৪৫তম বিসিএসে গণিতের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখতে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। এতেই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে খাতা দেখা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির। বিশেষ এ পদ্ধতি অব্যাহত থাকলে লিখিতের খাতা দেখার সময় আরও কমিয়ে আনাসহ দ্রুত বিসিএস শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে করে পিএসসি।

পিএসসি জানিয়েছে, গণিতের খাতা দেখা একটি সময়সাপেক্ষ বিষয় এবং নানা জটিলতা দেখা দেয়। এজন্য  এবার পিএসসি চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত অনুসারে ৪৫তম বিসিএসের গণিতের লিখিত পরীক্ষার খাতা পিএসসিতে বসেই দেখার সিদ্ধান্ত হয়। এখানে টিম অনুসারে সম্প্রতি পিএসসিতে এসেই পরীক্ষকেরা একটি কক্ষে বসেন। ক্রমানুসারে একেক পরীক্ষক একেক প্রশ্নের উত্তর দেখেন। কোনো সমস্যা মনে হলে প্রধান পরীক্ষক তা যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেন। এভাবে একের পর এক খাতা দেখা হয়। তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যাওয়ার দরকার পড়ছে না। এ বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে এখানে তিন দিনে প্রায় সাত হাজার লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা শেষ হয়েছে। আর বাকি প্রায় চার হাজার খাতা দেখতেও দুই দিন সময় লাগতে পারে। সেটিও দুই দিনেই সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এবার ৪৫তম বিসিএসে পাইলট প্রকল্প হিসেবে গণিতের খাতা পিএসসিতে বসেই দেখার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম দফায় সব শক্তি ব্যবহার না করেও অনেক সফল। এতে এই খাতা আর তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠাতে হচ্ছে না। কোনো সন্দেহ থাকলে বিশেষজ্ঞ পরীক্ষকেরাই এক স্থানে বসে সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন। এ পদ্ধতি অন্য পরীক্ষার খাতায় ব্যবহার করা যায় কি না, সেটিও ভেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানটি। এটি সম্ভব হলে বিসিএসের খাতা দেখতে আর বেশি সময় লাগবে না। বর্তমান পদ্ধতিতে কম করে হলেও লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখতে আট মাসের মতো সময় চলে যেত, যা ফল দেরিতে হওয়ার অন্যতম একটি বড় কারণ। সেটি কমিয়ে এনে দ্রুত ফল দেয়ার চেষ্টা করছে পিএসসি।


 
পিএসসি সূত্র আরও জানায়, বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা প্রথমে প্রথম পরীক্ষকের কাছে পাঠানো হতো। সেখান থেকে আসার পর যাচাই–বাছাই হয়ে আবার তা দ্বিতীয় পরীক্ষকের কাছে যায়। সেখানে যদি দেখা যায়, প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষকের দেয়া নম্বরের পার্থক্য ২০ শতাংশ বা এর বেশি, তাহলে তা আবার তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যায়। তার দেয়া নম্বরই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।
 
নাম না প্রকাশ করার শর্তে পিএসসির এক কর্মকর্তা জানান, ৪১তম বিসিএসের ফল প্রকাশ দেরি হওয়ার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ফল দিতে দেরির কারণ হিসেবে তদন্ত কমিটি ৩১৮ পরীক্ষকের গাফিলতি বা দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পায়। পরীক্ষকদের এমন অবহেলা কীভাবে কমানো যায়, সে জন্য তদন্ত কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করে। সেই সুপারিশের অংশ হিসেবে পিএসসি বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে। পিএসসির নানা উদ্যোগের কারণে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা যাওয়ার হার কমেছে। ৪১তম বিসিএসে ১৫ হাজার, ৪৩তম বিসিএসে ১০ হাজার ও ৪৪তম বিসিএসে ৯ হাজারের কিছু বেশি খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যায়। এতে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা যাওয়ার হার কমেছে। তবে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা যাওয়াকে বিসিএসের ফল দেরির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
 
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জুনে ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ১২ হাজার ৭৮৯ জন। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা এ বছরের ২৩ জানুয়ারি শুরু হয়, চলে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৩০৯ ক্যাডার নেয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেয়া হবে ১ হাজার ২২ জনকে। ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ ক্যাডারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হবে চিকিৎসায়। সহকারী ও ডেন্টাল সার্জন মিলিয়ে ৫৩৯ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। চিকিৎসার পর সবচেয়ে বেশি শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ পাবেন ৪৩৭ জন। এরপর পুলিশে ৮০, কাস্টমসে ৫৪ ও প্রশাসনে ২৭৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036299228668213