পুরনো শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করেছিলেন সাতক্ষীরার আশাশুনি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলাম। অনৈতিকভাবে শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও একাধিক ৩য় বিভাগ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে অবৈধভাবে নিয়োগ নিয়েছিলেন তিনি। বয়স ৬০ বছর হয়ে গেলেও মিথ্যা অযুহাতে সে দায়িত্বও ছাড়ছেন না। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। সে প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছে অধিদপ্তর সূত্র।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
জানা গেছে, আশাশুনি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে অভিযোগটি তদন্ত করতে শিক্ষা অধিদপ্তরকে বলে দুদক। অভিযোগটি তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় অধিদপ্তর। কর্মকর্তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্তে। ইতোমধ্যে কর্মকর্তারা তাদের মতামত জানিয়েছেন অধিদপ্তরকে।
অধিদপ্তর বলছে, তদন্ত কর্মকর্তারা মতামতে জানিয়েছেন আশাশুনি মহিলা কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হিসেবে এমপিওভুক্ত এবং প্যাটার্ন অনুযায়ী প্রতি বিষয়ে একজন করে শিক্ষক এমপিওভুক্ত থাকার কথা। এ ক্ষেত্রে যিনি বিধি মোতাবেক ১ম নিয়োগ প্রাপ্ত থাকবেন তিনিই এমপিওভুক্ত হবেন। কিন্তু কলেজে ইতিহাস ও ইসলামের ইতিহাসসহ কয়েকটি বিষয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের বাদ দিয়ে পরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
তদন্ত কর্মকর্তারা আরও বলেন, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের গত ৯ জুলাই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক গোপাল চন্দ হালদার ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক শম্ভু চরণ মণ্ডলকে বিধিবহির্ভুতভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
তদন্ত কর্মকর্তারা আরও বলছেন, মো. সাইদুল ইসলাম দুইটি ৩য় বিভাগ থাকা সত্ত্বেও অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ও এমপিওভুক্ত হয়েছেন যা বিধিসম্মত নয়। তার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগে কোন বিধি অনুসরণ করা হয়নি। শুধুমাত্র একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে তিনি অধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, মো. সাইদুল ইসলামের বয়স ৬০ বছর হওয়ার পরেও তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দেরর ১ সেপ্টেম্বর ৬০ বছর পূর্ণ হলেও অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেবছরের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তাকে দায়িত্ব হস্তান্তরের লিখিত নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। যদিও অধ্যক্ষ দাবি করেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তবে, তদন্ত কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাইদুল ইসলামকে গণিত বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়া হয়েছে, অধ্যক্ষ হিসেবে নয়। সার্বিক বিষয় বিবেজসায় অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে তদন্ত কর্মকর্তারা মত দিয়েছেন।
অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলছে, তদন্ত কর্মকর্তাদের মতামতের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আগে তাকে ও সভাপতিকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজ নোটিশে তদন্ত কর্মকর্তাদের পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে অধ্যক্ষকে। গত ৭ জুন তাকে শোকজ করা হয়েছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।