পৃষ্ঠা নম্বরসহ গাইড বইয়ের প্রশ্ন পরীক্ষায়

সাভার প্রতিনিধি |

ঢাকার ধামরাইয়ে এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় (টেস্ট) গাইড বইয়ের প্রশ্ন ফটোকপি করে প্রশ্নপত্র তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গতকাল রোববার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

এর আগে গত ১০ অক্টোবর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ওদুদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ে ভোকেশনাল শাখার রসায়ন বিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রশ্নপত্রটি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ফিরোজ আল মামুন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রশ্নপত্রে প্রশ্নের নিচেই উত্তরের পৃষ্ঠা নম্বর দেয়া ছিল। বিষয়টি নিয়ে অনেকের সন্দেহ হয়। পরে মিলিয়ে দেখা যায় এই প্রশ্নটি গাইড বই থেকে ফটোকপি করে তৈরি করা হয়েছে।

প্রশ্নপত্রটিতে দেখা যায়, পূর্ণমান ৩০ নম্বরের রসায়ন বিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) ১৯২৬ নম্বর কোডের ক-বিভাগের প্রশ্নপত্রটিতে ১২টি প্রশ্ন রয়েছে। প্রতিটি প্রশ্নের নিচে উত্তরের পৃষ্ঠা নম্বর ও কোন অধ্যায় থেকে প্রশ্নটি করা হয়েছে তার উল্লেখ রয়েছে।

গাইড বই থেকে ফটোকপি করে প্রশ্নপত্র তৈরি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ওই শিক্ষকদের কাছে যারা টিউশন পড়েন। তাদের সুবিধা করে দিতেই এমন প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ওই শিক্ষকদের কাছে যারা প্রাইভেট পড়ে, তাদের সুবিধা করে দিতে এভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে।  

এদিকে, প্রশ্নপত্রের বিষয়টি নিয়ে দুই শিক্ষক একে অপরকে দোষারোপ করেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভোকেশনালে আমি দুই মাস ক্লাস নিয়েছি। আগে নিয়েছেন ফিরোজ স্যার। আমাকে প্রশ্ন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আমি ফিরোজ স্যারকে বলার পর প্রশ্ন উনিই করেছেন। আমি শুধু বিষয়টা দেখতে বলেছি। প্রশ্ন এরকম করেই বানানো হয়। শুধু নিচের ওই লেখা মুছে দিলেই বিষয়টা কেউ ধরতে পারতো না। 

শিক্ষক ফিরোজ আল মামুন বলেন, প্রশ্ন জাহাঙ্গীর স্যারের করার কথা ছিল। পরে আমি বানিয়েছি। কম্পিউটার অপারেটরকে দিয়েছিলাম। সে ঠিক করতে পারেনি। তাই এমনটা হয়েছে।

প্রশ্নপত্র নিজের তৈরি করে দেয়ার কথা ছিল কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ের প্রশ্ন আমরা পাই না কোথাও থেকে। তাই গাইড বইয়ের সহযোগিতা নিয়েছি। লেখাটা মুছে দেয়া উচিত ছিল।

এ ঘটনার তদন্তে বিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক আরিফ হোসেন, বাংলা শিক্ষক সফিকুল ইসলাম ও ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক সবুজ আহমেদকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে একদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বালিয়ার ওদুদুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দু্র রাজ্জাক বলেন, গত নভেম্বর মাসে অফিস আদেশে স্ব-স্ব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে প্রশ্নপত্র তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়। সেই প্রশ্নেই পরীক্ষা হচ্ছে। ১০ তারিখ ভোকেশনাল রসায়ন বিজ্ঞান-২ বিষয়ের প্রশ্নটি নিয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি জানার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা যে প্রতিবেদন দেবেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আশরাফি বলেন, এ অভিযোগের বিষয়ে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045938491821289