দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’র প্রজ্ঞাপন ২৫ মে’র মধ্যে প্রত্যাহার না হলে ৪ জুন থেকে একযোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এর পরেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে ওইদিনই বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তারা।
সোমবার (২০ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারিই দিয়েছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষকরা বলেন, সার্বজনীন পেনশন স্কিম বৈষম্যমূলক ও অগ্রহণযোগ্য। ২৫ মের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে ২৬ মে থেকে সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা একযোগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন।
২৮ মে সারা দেশে শিক্ষকেরা একযোগে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করবেন। ৪ জুন শিক্ষকরা একযোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুপারগ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতনস্কেলের দাবিও জানান তারা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশের মোট ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষকরা আরো বলেন, এমন পেনশন স্কিম বৈষম্যমূলক এবং অগ্রহণযোগ্য যা কার্যকর হলে আগামী দিনে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসার আগ্রহ হারাবেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়বে এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্র সংকুচিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম বলেন, এই পেনশন স্কিমের মাধ্যমে একটি গ্রুপকে ঠিক আলাদা করে দেয়া হলো। এতে এক গ্রুপ রয়ে গেলেন আর আরেক গ্রুপকে সরিয়ে দেয়া হলো। এর ফলে শিক্ষকরা ৭৯ হাজার টাকা প্রতি মাসে পেনশন পাবেন। আর যারা আগের পেনশন স্কিমে রয়ে গেলেন তারা ৩৫ হাজার টাকা পেনশন পাবেন কিন্তু একসঙ্গে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা পাবেন তারা।
পেনশন স্কিমের অসুবিধে তুলে ধরে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, এই ব্যবস্থা সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি করবে, যা সংবিধানের সমতার নীতির পরিপন্থী।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, শিক্ষকরা একটা ধৈর্যের পরিচয় সব সময় দিয়ে থাকে।