পেলের প্রাসাদে লুটপাট চলছে

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার পেলে মারা গেছেন মাত্র দেড় বছর হয়েছে। আর এরি মধ্যে অযত্ন-অবহেলায় পড়েছে তার বাড়িটি। ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ এনে কিংবদন্তীর মৃত্যুর পর তার নিজ দেশের বাড়িতেই চলছে অবাধে লুটপাট।

ব্রাজিলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক মহানগর সাও পাওলো। আটলান্টিক মহাসাগরের ‍কূলঘেঁষা এই শহরেই নিজের পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসের জন্য মনস্থির করেছিলেন পেলে। নিউইয়র্ক থেকে ফিরে আট মিলিয়ন ডলারে নির্মাণ করেন প্রাসাদসম বাড়ি।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাও পাওলোর গুয়ারুজা এলাকার এক্সক্লুসিভ এই কনডোমিনিয়ামেই ৪০ বছর বসবাস করেছেন পেলে। সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র কয়েকশো মিটার দুরের এই বাড়িটি পেলের খুব শখের ছিল। সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়ালেও ফুটবল রাজার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল এই বাড়িটি।

ব্রাজিলের নামকরা সৈকতগুলোর একটি হলো পেরনামবুকো। এই সৈকতের ধারেই নিপুণ যত্নে বাড়িটি নির্মাণের পর নানা ধরণের সৌখিন ও বিলাসী আসবাবে সাজানো হয়। পেলের বাড়ির পাথরের প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত করা হয়, যা দেখতে অনেকটা দুর্গের মতো লাগে।

প্রাসাদে রয়েছে এক ডজন কক্ষ, সিনেমা হল সুইমিং পুল ও অনেকটা প্রচুর খোলা জায়গা। বাড়ির মধ্যের খোলা জায়গাতেই শুটিং স্পট এমনকি পেলে তার নিজের গান রেকর্ড করার স্টুডিও বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

বাড়িটির ওপরে ছিল একটি ড্যান্স ক্লাব। যখন পেলের বন্ধুরা আসতেন, তখন সেখানেই বসতো পার্টি। কখনো কখনো পার্টিতে এতো পরিমাণ আমন্ত্রিত অতিথিরা আসতেন, যা যে কোনো জমায়েতকেও হার মানিয়ে দিতো।

এমনকি ফুটবলের রাজাকে খেলাধুলার জন্যও বাড়ির বাইরে যাওয়ার দরকার হতো না। কারণ বাড়ির উঠোনেই টেনিস ও ভলিবল কোর্ট, একটি মিনি ফুটবল মাঠ এবং একটি বড় সুইমিং পুল। শরীর পরিষ্কার ও সতেজ করার জন্য গরম বাতাস বা বাষ্প স্নান হিসাবে ব্যবহারের জন্য বিশাল কক্ষও নির্মিত করা হয়। বিনোদনের জন্যই বাড়ির বাইরে পা রাখার প্রয়োজন হত না পেলের।

বাড়ির অভ্যন্তরে একটি চ্যাপেলও তৈরি করেন পেলে, যাতে তার মা সেলেস্তি সেখানে প্রার্থনা করতে পারেন। কারণ তাদের পরিমাণ কট্টর ক্যাথলিক অনুসারী ছিলেন। এই বাড়িতে রাখা হয় ফুটবলের মহাতারকার কয়েক ডজন স্যুট, তার অগণিত ট্রফি, নানা ঐতিহাসিক স্মৃতির ছবি, দামি কার্পেট, বহু বই, নানা ধরনের দামি দামি শিল্পকর্ম।

কিন্তু ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর পেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পরই বেহাল দশার শিকার হয় সাধের বাড়িটি। দেখার কেউ থাকে না। দুষ্কৃতীরা একেবারে বিনা বাধায় এবং অনেকটা প্রকাশ্যেই লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে।

পেলের বাড়ির লুটপাটের বহু চিত্র প্রকাশ করেছে লন্ডনের ডেইলি সান। তাতেই ফুটে উঠেছে কীভাবে মহাতারকার যত্নের সব কিছু নষ্ট হচ্ছে অযত্ন আর অবহেলায়। বাড়ির সিঁড়ি, দেওয়ালের বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ক্ষতি করা হয়েছে আসবাবপত্র। চুরি হয়ে গেছে পেলের বহু ফুটবল স্মারক।

পেলের সন্তানরা যে বাড়ির দখল নিয়ে দেখভাল করবেন, তাতেও বেঁধেছে ঝামেলা। কিছুটা আর্থিক সঙ্কটের কারণে মৃত্যুর আগে বিভিন্ন কর দিতে পারেননি অসুস্থ পেলে। গত কয়েক বছরে বকেয়ার পরিমাণ বেড়েছে বহু।

বাড়ির দখল নিতে হলে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থ এখন জোগাড় করতে পারছেন না পেলের উত্তরাধিকাররা। তাই আইনি জটিলতায় এখন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফুটবল রাজার স্মৃতিময় সব সম্পদ। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এইচএসসি পরীক্ষার দিন বৃষ্টি হলে সময় বাড়ানোর নির্দেশ - dainik shiksha এইচএসসি পরীক্ষার দিন বৃষ্টি হলে সময় বাড়ানোর নির্দেশ প্রথম দিনে বহিষ্কার ২৪, অনুপস্থিত ১৩ হাজার - dainik shiksha প্রথম দিনে বহিষ্কার ২৪, অনুপস্থিত ১৩ হাজার ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণের পর সিদ্ধান্ত’ - dainik shiksha ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণের পর সিদ্ধান্ত’ কাল থেকে ঢাবিতে পরীক্ষা বর্জনসহ সর্বাত্মক কর্মবিরতি - dainik shiksha কাল থেকে ঢাবিতে পরীক্ষা বর্জনসহ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল - dainik shiksha পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল এমপিওভুক্তির জন্য টেবিলে টেবিলে টাকা দিতে হয় - dainik shiksha এমপিওভুক্তির জন্য টেবিলে টেবিলে টাকা দিতে হয় শিক্ষাসচিব ও মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে একি বললেন অধ্যক্ষ! - dainik shiksha শিক্ষাসচিব ও মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে একি বললেন অধ্যক্ষ! কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে আহমদ ছফার বইয়ে ছফার প্রচ্ছদই নেই - dainik shiksha আহমদ ছফার বইয়ে ছফার প্রচ্ছদই নেই দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028138160705566